Sonakshi Sinha Wedding: সোনাক্ষীর হবু বরের ছিল একাধিক নায়িকা-সঙ্গ, পড়েছিলেন পুলিশের খপ্পড়ে, রয়েছে ‘ভাইজান’ সূত্র!
হাতে নেই এক সপ্তাহ সময়ও। চলতি মাসের ২৩ তারিখে ‘মিস’ থেকে ‘মিসেস’ হচ্ছেন বলি অভিনেত্রী সোনাক্ষী সিনহা। ইতিমধ্যেই নিজের বিয়ের খবর প্রকাশ্যে এনেছেন বলি তারকা। ফাঁস হয়েছে তার বিয়ের আমন্ত্রণ পত্র। ‘ডেস্টিনেশন ওয়েডিং’ নয়, মায়নগরীতেই বিয়ে করবেন তিনি। বিয়ের আসর বসছে বলি তারকা শিল্পা শেট্টির বিলাসবহুল রেস্তোরাঁ ‘বাস্তিয়ানে’।
সোনাক্ষীর দীর্ঘ দিনের প্রেমিক জাহির ইকবাল। তাঁর সঙ্গেই সাত পাকে বাঁধা পড়ছেন ‘দবং’ খ্যাত অভিনেত্রী। বিয়ের আমন্ত্রণ পত্রে নিজেদের সাত বছরের সম্পর্কের কথাও শিকার করে নিয়েছেন হবু দম্পতি। কিন্তু কে এই জাহির ইকবাল? কী করেন তিনি? জানা আছে কি!
সোনাক্ষীর মতোই পেশায় অভিনেতা জাহির। যদিও বলিউডে এখনও খুব একটা জমি শক্ত করতে পারেননি জাহির। তবে তাঁর নাকি যোগ রয়েছে ‘ভাইজানের’ সঙ্গেও। শোনা যায় সোনাক্ষী-জাহিরের প্রেমের পিছনেও নাকি হাত রয়েছে ভাইজানের।
১৯৮৮ সালের ১০ ডিসেম্বর মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ে জন্ম জাহিরের। বাবা-মা, ভাই এবং দিদির সঙ্গে মুম্বইয়ে বাস তাঁর। বেড়ে ওঠাও মায়ানগরীতে, সেখানেই স্কুল এবং কলেজের পড়াশোনা শেষ করেছেন সিনহা পরিবারের হবু জামাই।
বাড়িতে অভিনয়ের সঙ্গে যোগ নেই কারো। বাবা পেশায় ব্যবসায়ী। তবে ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল জাহিরের। এমনকি, ছাত্রজীবনে তিন বন্ধুর সঙ্গে ছবি বানাবেন বলে পরিকল্পনাও করেছিলেন তিনি। সেই ছবিতে বন্ধুরা প্রযোজক, পরিচালক এবং চিত্রনাট্যকারের ভূমিকা পালন করলেও জাহিরের ইচ্ছা ছিল ক্যামেরার সামনে থাকার। কিন্তু স্বপ্ন পূরণ হয়নি তাঁর। কলেজের পড়াশোনা শেষ করে পারিবারিক ব্যবসায় যোগ দেন। টানা ছ’বছর ব্যবসার কাজ করেন তিনি।
সূত্রে খবর খান পরিবারের সঙ্গে জাহিরের যোগাযোগ স্কুল জীবন থেকে। সলমান খানের বোন অর্পিতা খান এবং হাজির ছিলেন একই স্কুলের সহপাঠী। সেই সূত্রেই পরিচয় খান পরিবারের সঙ্গে। শোনা যায় ওই একই স্কুলে নাকি জাহির-অর্পিতার সিনিয়র ছিলেন রণবীর কাপুরও।
জাহিরের বাবা ইকবাল রত্নাসির সঙ্গেও বহুদিনের পরিচয় ভাইজানের। এক পুরনো সাক্ষাৎকারে জাহির জানান একবার নাকি জাহিরের বাবার থেকে দুহাজার এগারো টাকা ধার করে ‘ডেটে’ গিয়েছিলেন সলমান। জাহিরের কেরিয়ার গড়ে সেই ধার শোধ করতে চান ভাইজান।
জাহিরের দাবি তাঁর দিদির বিয়েতে জাহিরের সঙ্গে নাচতে নাচতে নাকি সলমন অভিনয় করার পরামর্শ দেন তাঁকে। তিনি বলেন, ‘দিদির বিয়েতে আমি নাচছিলাম, হঠাৎ দেখি সলমান আমার সঙ্গে নাচছেন। দু’জনে প্রায় ১ ঘন্টা নেচেছিলাম। তখনই তিনি আমায় জিজ্ঞাসা করেছিলেন আমি কোনও কাজ করছি কি না। আমি তখন বলি তেমন কিছু করি না, তখন আমাকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন সলমান। বিয়ের দিন সলমনের একটা কাজে রাজস্থান যাওয়ার কথা ছিল, আমরা তো ভেবেছিলাম ও আসবে না। কিন্তু হঠাৎ সেই কাজ বাতিল হওয়ায়, সলমান দিদির বিয়েতে আসেন।’ এর পরেই জাহিরকে অন্য সব কিছু ত্যাগ করে অভিনয়ে মন দেওয়ার পরামর্শ দেন সলমন খান। তাঁর সঙ্গে নাচ এবং মার্শাল আর্টসের প্রশিক্ষণ নিতে বলেন জাহিরকে।
প্রথমে সলমনের সহকারী হিসাবে কাজ শুরু করেন জাহির। ২-৩ বছর সলমনের সঙ্গে কাজ করার সূত্রে অভিনেতার সঙ্গে ছবি নিয়ে আলোচনা করারও সময় পেতেন তিনি। সলমন কোনও ছবির শুটিং করলে সেখানে চলে যেতেন জাহির। সলমন কী ভাবে অভিনয় করছেন তা অনুসরণ করতেন। জাহিরকে বহু ছবির চিত্রনাট্য পড়তে দিতেন সলমন। দু’জন একসঙ্গে সংলাপ বলার মহড়া দিতেন। প্রায় হাতে ধরে ধাপে ধাপে জাহিরকে অভিনয় প্রশিক্ষণ দেন সলমন।
২০১৪ সালে সোহেল খানের ছবি ‘জয় হো’তে সহ-পরিচালনার কাজ করেন জাহির। পাঁচ বছর ক্যামেরার পিছনে থেকে কাজ শেখেন তিনি। ২০১৯ সালে সলমনের ‘নোটবুক’ ছবির হাত ধরে বলিপাড়ায় প্রথম আত্মপ্রকাশ জাহিরের।
কাজ করেছেন হবু স্ত্রী সোনাক্ষীর সঙ্গে একই ছবিতেও। ২০২২ সালে মুক্তি পাওয়া ‘ডাবল এক্সএল’ ছবিতে সোনাক্ষী সিনহা এবং হুমা কুরেশির সঙ্গে অভিনয় করেন জাহির। একাধিক মিউজিক ভিডিয়োয় অভিনয় করছেন তিনি। ২০২২ সালেই সোনাক্ষীর সঙ্গে ‘ব্লকবাস্টার’ নামের একটি মিউজিক ভিডিয়োতেও অভিনয় করেন। ২০২৩ সালে সলমনের ‘কিসি কা ভাই কিসি কি জান’ ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের করেছেন জাহির।
বি টাউনে কান পাতলে শোনা যায় সোনাক্ষীর আগেও একাধিক মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল জাহিরের। দক্ষিণী মডেল-অভিনেত্রী দীক্ষা সিংহের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন অভিনেতা। কিন্তু সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়। দীক্ষার সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ ছবির শিশু শিল্পী সানা সইদের সঙ্গে নাম জড়ায় জাহিরের। কিন্তু সেই সম্পর্ক বেশি দিন টেকেনি।
বিয়ের আগে থেকেই নাকি প্রেমিকের সঙ্গে থাকছেন সোনাক্ষী বলেও খবর। গত এক বছর নাকি তাঁরা একই সঙ্গে থাকেন। জাহিরের কেরিয়ারের মতোই প্রেমেও অবদান রয়েছে ভাইজানের। শোনা যায় সলমনের এক পার্টিতে পরিচয় যুগলের। সেখান থেকে বন্ধুত্ব তারপর প্রেম।
অভিনয়ের সঙ্গেই সাঁতার কাটতে, সাইকেল চালাতে, দৌড়তে পছন্দ করেন জাহির। পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে যেতে বেশ পছন্দ করেন অভিনেতা। তাঁর কাছে নাকি দুবাই সরকারের দেওয়া ‘গোল্ডেন ভিসা’ রয়েছে।
তবে একবার নাকি পুলিশের নজরেও পড়েছিলেন সোনাক্ষীর হবু দম্পতি। বলিপাড়ার অন্দরমহল সূত্রে খবর, ট্র্যাফিক নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য জরিমানা হয়েছিল জাহিরের। মুম্বইয়ের বান্দ্রা এলাকায় অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন, তাই জরিমানা করেছিল মুম্বই পুলিশ।