সুপারনিউমারি মামলায় সুপ্রিম স্বস্তিতে রাজ‍্য! সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট, স্বস্তিতে মমতা ও রাজ্য মন্ত্রিসভা

9

২০২২ সালেই এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআই তদন্তের প্রেক্ষিতে কিছু ‘অযোগ্যে’র চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন। ওই সময়েই প্রায় ছ’হাজারের কাছাকাছি ‘সুপারনিউমেরারি’ পদ তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা দফতর। ৫ মে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকেও ওই সিদ্ধান্তে অনুমোদন দেওয়া হয়। অভিযোগ ওঠে যে, বেআইনি ভাবে নিযুক্তদের বাঁচানোর জন্যই সুপারনিউমেরারি বা অতিরিক্ত পদ তৈরি করা হয়েছিল। ওই মামলার শুনানিতে তৎকালীন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্যের মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের অতিরিক্ত শূন্যপদ (সুপারনিউমেরারি পোস্ট) তৈরিতে হস্তক্ষেপ করল না সুপ্রিম কোর্ট। কলকাতা হাই কোর্টের দেওয়া সিবিআই তদন্তের নির্দেশ মঙ্গলবার খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরিতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নেওয়া হয়েছিল। রাজ্যপালের অনুমোদনও নেওয়া হয়। সেই কারণে আদালতের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই। এই রায়ের ফলে স্বস্তিতে মমতা ও রাজ্য মন্ত্রিসভা।

২০২২ সালের মে মাসে এসএসসিতে নিয়োগের জন্য ছ’হাজারের কাছাকাছি অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করেছিল শিক্ষা দফতর। এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। রাজ্য মন্ত্রিসভাতেও ওই সিদ্ধান্তে অনুমোদন দেওয়া হয়। হাই কোর্ট জানিয়েছিল, অতিরিক্ত শূন্যপদ গঠনের ওই সিদ্ধান্ত ‘আইনি নয়’। সিবিআই প্রয়োজনে মন্ত্রিসভার সদস্যদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে বলেও জানিয়েছিল হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। হাই কোর্টের ওই নির্দেশের উপর সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তা খারিজও করে দিল।

অতিরিক্ত শূন্যপদ নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট যে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছে, সে খবর পৌঁছোয় শহিদ মিনারে অবস্থানরত চাকরিহারাদের কাছেও। রায় প্রসঙ্গে তাঁদের এক সদস্য বলেন, “সুপারনিউমেরারি পদ নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য ছিল না। এটা আদালতের বিচার্য। কিন্তু আমরা এটা দেখলাম যে, যারা দুর্নীতি করেছে, তাদের তেমন শাস্তি হল না। অন্য দিকে, আমরা যারা যোগ্য, দুর্নীতি না-করেই চাকরি পেয়েছি, শাস্তি তাদেরই হল।”

পরে এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চে যায়। গত বছরের ২২ এপ্রিল বিশেষ বেঞ্চও জানায়, সুপারনিউমেরারি পদ তৈরির সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি। সিবিআই প্রয়োজনে মন্ত্রিসভার সদস্যদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে বলেও জানিয়েছিল হাই কোর্টের ওই বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ। হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ সুপারনিউমেরারি পদ তৈরি নিয়ে মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান প্রধান বিচারপতি খন্নার বেঞ্চ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করে দিল।

Comments are closed.