Tripura Flood : ভারী বর্ষণ, বন্যা ও ভূমি ধসে বিপর্যস্ত ত্রিপুরা, মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২২ জনের

0 32

কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে গোটা ত্রিপুরা রাজ্য জলমগ্ন। বন্যার জলে তলিয়ে গেছে বহু ঘর বাড়ি। ভারী বর্ষণ, বন্যা ও ভূমি ধসে বিপর্যস্ত ত্রিপুরা। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে রাজ্যে ক্রমশ বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। রাজধানী আগরতলা সহ রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায়।

গত চার দিনে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২২ জনের। বৃষ্টির কারণে ধস নেমে একই সঙ্গে দুই পরিবারের সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন মহিলা এবং শিশুরাও। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘরের ভেতরে ঘুমন্ত অবস্থায়ই ধসে চাপা পড়ে দুই পরিবারের সাত সদস্য। এই ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বিধবস্ত ত্রিপুরার অধিকাংশ এলাকায় নেই বিদ্যুৎ। ফলে রাজ্যের অধিকাংশ হাসপাতালেও হাহাকার পরিস্থিতি। তিনদিন থেকে বিদ্যুৎ নেই। সন্ধ্যার পর রোগীদের ভরসা মোমবাতি। বিদ্যুৎ না থাকায় বন্ধ রয়েছে পানীয় জল পরিষেবা। এক কথায় মহাবিপাকে পড়েছেন রোগী ও তাঁদের আত্মীয়রা।

গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও বন্যায় ভয়াবহ পরিস্থিতি রাজধানী আগরতলায়ও। যে সব জায়গা কোনও দিন জলে ডুবেনি, সেই সব এলাকায় বর্তমানে নৌকা চলছে। আগরতলা শহরের বুক চিরে বয়ে গিয়েছে দুটি ছোট্ট নদী। একটি হাওড়া নদী, ওপরটি কাটাখাল। দীর্ঘ বছর আগেই ওই দুটি নদী অস্তিত্ব হারিয়েছে। নেই জল ধারণ ক্ষমতা। আগরতলা শহরের প্রায় সবকটি নালা গিয়ে মিশেছে ওই দুই নদীতে। কিন্তু উভয় নদীতে জলস্ফীতি দেখা দেওয়ায় শহরের জল বের হওয়ার কোনও সুবিধে নেই। বরং নদীর জল শহরে ঢুকে প্লাবিত হয়েছে বিভিন্ন এলাকা। আগরতলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে রাজবাড়ি। এবার বন্যার জল ঢুকে পড়েছে রাজবাড়িতেও। অধিকাংশ সড়ক, স্কুল-কলেজ, বাস স্ট্যান্ড, অফিস-আদালত জলের তলায়। রাজধানী শহরের বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ। নেই ইন্টারনেট। পাড়ায় পাড়ায় জলবন্দী হাজার হাজার মানুষ। তবে প্রশাসনের বিরুদ্ধে বাড়ছে মানুষের ক্ষোভ।

ত্রিপুরায় এর আগে এরকম প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেনি বললেই চলে। বন্যায় এত ক্ষয়ক্ষতি আগে হয়নি। তাই পরিস্থিতি সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে রাজ্য সরকার ও প্রশাসন। সচিবালয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহার পৌরোহিত্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে একের পর এক বৈঠক। বন্যাক্রান্তদের দ্রুত উদ্ধার ও ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা।

এখনও আগরতলা সহ প্রতিটি জেলার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যুৎ, ইন্টারনেটের সঙ্গে বহু এলাকা সড়ক পথে বিচ্ছিন্ন। পাহাড়ে বৃষ্টি না কমলে পরিস্থিতি আরও জটিল রূপ নিতে পারে। তাই রাজ্য সরকার জারি করেছে রেড এলার্ট।

Leave A Reply

Your email address will not be published.