বিভাজন উঁকি মারছে বাংলার রাজনীতিতে!

11

ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রীতিমত আড়াআড়ি বিভাজনের রাজনীতি উঁকি মারছে বাংলার রাজনীতিতে! কেউ বলছেন তিনি হিন্দুদের একত্রিত করতে চান, আবার আরেক পক্ষ বলছেন বিজেপির গন্দা ধর্ম মানেন না। কেউ বলছেন সংখ্যালঘুদের ভোট তাদের দরকার নেই, কেউ বলছেন সংখ্যালঘুদের পাশে আছেন। এই পরিণাম কখনও শান্ত বাংলা আবার কখনও অশান্ত!

জেলার নাম মুর্শিদাবাদ। বসবাসকারীদের অধিকাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। ওয়াকফ বিল থেকে আইনে পরিণত হওয়ার পরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিবাদাদের জঙ্গিপুর! মঙ্গলবার বিকেলে জঙ্গিপুরে সংখ্যালঘু ছাত্র ও যুব সংগঠনের ডাকে আন্দোলন-বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘিরে অবরুদ্ধ হয় ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক। অবরোধ তুলতে গেলে পুলিশের সঙ্গে বাধে সংঘর্ষ। অভিযোগ, পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠি চালায় পুলিশ। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল। বুধবার সকাল থেকে থমথমে এলাকা। বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা। পরিস্থিতি সামালে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় ১৬৩ ধারা জারি থাকবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। প্রসঙ্গত, তার কিছুদিন আগেই মালদহের মোথাবাড়িতেও সম্প্রদায়িক অশান্তিকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়েছিল পরিস্থিতি। এই জেলাতেও বসবাসকারীদের অধিকাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। কিন্তু কেন এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হল যে পুলিশের গাড়ি জ্বলল প্রকাশ্য রাস্তায়?

এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির সুকান্ত মজুমদাররা। কিন্তু বাংলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হলে বা না হলে লাভ কাদের? রাজনীতিকদের ভূমিকা কী প্রশ্ন চিহ্নের মুখে? কেন সেনসেটিভ বিষয় ও পরিস্থিতি বুঝেও রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা একে অপরকে কটাক্ষ করতে গিয়ে বারবার সম্প্রদায়িক বিভাজনের কথা বলছেন? সদ্য মুখ্যমন্ত্রীর একটি মন্তব্য পোস্ট করে বিজেপির সুকান্ত মজুমদাররা অভিযোগ তুলেছেন।

শুভেন্দু অধিকারী এদিনও মুখ্যমন্ত্রীকে মিথ্যাবাদী ও হিন্দু-বিরোধী বলে আক্রমণ করেন। আক্রমণের নেশায় পিছিয়ে নেই তৃণমূলের নেতা-বিধায়করাও। শুভেন্দু অধিকারিকে মুর্শিদাবাদে ঢুকতে না দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন হুমায়ুন কবীর।
উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অধীররঞ্জন চৌধুরী। সম্প্রীতি বজায় রাখার আবেদন করেছেন স্থানীয় সাংসদ।
এখন প্রশ্ন ২টিই, রাজ্যের সাম্প্রদায়িত সম্প্রীতি রক্ষায় রাজনীতিকরা কি নিজেদের দায় এড়িয়ে যেতে পারেন? রামনবমীকে অশান্তির আশঙ্কায় পুলিশি ব্যবস্থা থাকলে কেন ওয়াকফ প্রতিবাদে পুলিশি ব্যবস্থা ছিল না?

Comments are closed.