কেরালার ওয়ানাডের ধসে মৃত্যু হয়েছে সাড়ে তিনশোরও বেশি মানুষের। উত্তরাখণ্ডের ধসের পর ওয়ানাডের ধস এই সময়ের সবচেযে বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়। কেন ভারতে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও ভূমি ধসের প্রবনতা বাড়ছে? খবর সূত্রে,
বিশ্বের ধস প্রবণ এলাকার শীর্ষে রয়েছে ৪ দেশ। ভারত, নেপাল, তাজাকিস্তান ও কলম্বিয়া। ভারতের ১২.৬% ভূখণ্ড ধস প্রবণ এলাকা।
গত ২৫ বছরে বেড়েছে ধসের প্রবণতা। বিশ্বের সর্বোচ্চ ধস প্রবণ এলাকার তালিকায় চার নম্বরে ভারত। ভারতের ৪ লক্ষ ২০ হাজার বর্গ কিলেমিটার এলাকা ধস প্রবন এলাকার মধ্যে পড়ে। তার মধ্যে ১ লক্ষ ৮০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা উত্তরপূর্ব হিমালয়ে রয়েছে। ১ লক্ষ ৪০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা রয়েছে উত্তর পশ্চিম হিমালয়ে। পশ্চিমে কোঙ্কন এলাকার ৯০ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা ও দক্ষিণে অন্ধ্র সংলগ্ন আরাকু ভ্যালির ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার ধস প্রবণ এলাকা রয়েছে। এই সব এলাকায় ভূমি ধসের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। ১৯৯৮ থেকে ২০২২ পর্যন্ত এই এলাকাগুলিতে বেড়েছে ধসের সংখ্যাও।
ধসের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে মিজোরাম। গত ২৫ বছরে মোট ১২ হাজার ৩৮৫ বার ধসের কবলে পড়েছে এই রাজ্য। তার পরেই রয়েছে উত্তরাখণ্ড। ধসের সংখ্যা ১১ হাজার ২১৯। ত্রিপুরা গত ২৫ বছরে মোট ৮ হাজার ৭০ বার ধসের কবলে পড়েছে। অরুণাচল প্রদেশে সংখ্যাটা ৭ হাজার ৬৮৯। জম্মু কাশ্মীরে সংখ্যাটা ৭ হাজার ২৮০।
গত ২৫ বছরে মোট ১৭টি রাজ্য, ২টি কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের মোট ১৪৭ টি জেলায় ৮১০০০ ধসের ঘটনার তথ্য আছে সরকারের কাছে। কেরলে গত ২৫ বছরে ৬ হাজার ৩৯ বার ধস নেমেছে। জিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার তথ্য বলছে, প্রতি বছর ধসের কারণে দেশের মোট জাতীয় পণ্যের ১-২% ক্ষতি হয়। ধসের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কৃষিকাজ। ধস কবলিত এলাকাকে আবার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরিয়ে আনতেও ক্ষতির মুখ দেখে সেই রাজ্য ও দেশের কোষাগার। ধসের কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে,
প্রতি বছর ৫ সেন্টিমিটার করে উত্তরমুখী দিশায় সরছে ভারতীয় প্লেট। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ভূখণ্ডের ভীত, উত্তর হিমালয়ে ধসের প্রবণতা বাড়ছে। তীব্র গতিতে বাড়ছে নগরায়ন ও বন নিধন। বদলে যাচ্ছে পার্বত্য এলাকার মানচিত্র আলগা হচ্ছে ভূখণ্ড। বাড়ছে ভূমিকম্প ও ধসের প্রবণতা, সিঁদুরে মেঘ দেখছেন পরিবেশবিদরা। ওয়েনাড ও উত্তরাখন্ডের বিপর্যয় মানুষের জন্য অশনিসংকেত। এখন থেকে হাল না ধরলে সামনে রয়েছে বড় বিপদ।