রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগের তদন্তে বিশেষ অনুসন্ধান দল গঠন করল কলকাতা পুলিশ। সূত্রের খবর, ৭ থেকে ৮ জন রয়েছে এই স্পেশাল ইনকোয়ারি টিমে। দলের নেতৃত্ব রয়েছেন কলকাতা পুলিশের সেন্ট্রাল ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার ইন্দিরা মুখার্জি। এছাড়াও –এই দলে থাকবে হেয়ার স্ট্রিট থানা ও লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ। অন্যদিকে, রাজভবনের তরফ থেকে বৃহস্পতিবার কলকাতা পুলিশের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। তবে লালবাজার এ বিষয়ে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, রাজভবনের পক্ষ থেকে কলকাতা পুলিশের কাছে এই ধরনের কোনও অফিসিয়াল নির্দেশ আসেনি। সূত্রের খবর শুক্রবার রাজভবনে যায় বিশেষ অনুসন্ধান দল। পুলিশ ইতিমধ্যেই বেশ কিছুজনের নামের তালিকা তৈরি করেছে। তাঁদের মধ্যে কিছুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁদের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। অন্যদিকে, অভিযোগকারিণী সঙ্গে কথা বলছেন বিশেষ অনুসন্ধান দলের আধিকারিকরা। অভিযোগকারিণী রাজভবনের অতিথিশালায় থাকতেন। অভিযোগ দায়েরের পর তিনি পুলিশের কাছে নিরাপত্তার আবেদন জানিয়েছিলেন। তাঁকে একটি নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় দিয়েছে লালবাজার।
বাংলার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ ওঠার পর বৃহস্পতিবার ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায় বলেছিলেন, ‘সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৬১ অনুসারে, রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যপালদের বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি পদক্ষেপ করা যায় না। সাংবিধানিক রক্ষাকবচ রয়েছে রাজ্যপালের। তবে জমিজমা সংক্রান্ত কোনও দেওয়ানি মামলা করা যেতেই পারে। এই ধরনের অভিযোগ অতীতে উঠেছে বলে আমার মনে পড়ছে না। ফলে আদালতে বিষয়টি গেলে কী হবে, তা আমার জানা নেই। সুপ্রিম কোর্ট একে কী ভাবে ব্যাখ্যা করবে, তা তো বোঝা সম্ভব নয়।’
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হেয়ার স্ট্রিট থানায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানান এক মহিলা। পুলিশের কাছে তিনি নিজেকে রাজভবনের অস্থায়ী কর্মী বলে দাবি করেন। মহিলার দাবি, রাজভবনে দু’বার শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন তিনি।
রাজ্যপাল এই বিষয়ে বিবৃতি দিয়ে জানান, ‘সাজানো’ অভিযোগে তিনি ভয় পান না। বৃহস্পতিবার রাতেই রাজভবনের তরফে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়, রাজভবন চত্বরে পুলিশকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। পাশাপাশি, ‘ব্যান’ করা হয় রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকেও। এমনকি, চন্দ্রিমা কোনও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলে, সেখানে রাজ্যপাল যাবেন না বলেও জানায় রাজভবন।