ডিজিটাল ডেস্ক, ২৫ এপ্রিল: পহেলগাঁওয়ে ২৬ জন পর্যটকের নির্মম হত্যাকাণ্ডে নিন্দায় সরব হয়েছে গোটা বিশ্ব। ইতিমধ্যেই এই জঘন্য হামলার পেছনে পাকিস্তানি যোগের ইঙ্গিত উঠে এসেছে তদন্তে। তার মধ্যেই আগুনে ঘি ঢেলে বিতর্কিত মন্তব্য করলেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার। এক বিবৃতিতে তিনি দাবি করেন, পহেলগাঁওয়ে হামলাকারীরা ‘জঙ্গি’ নয়, তারা হতে পারে ‘স্বাধীনতা সংগ্রামী’। তাঁর এই মন্তব্যকে ঘিরে বিশ্বজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মন্তব্য আরও একবার প্রমাণ করে দিল—জঙ্গিদের প্রতি পাকিস্তানের মদত ও সহানুভূতি আজও কতটা গভীর।
গত ২২ এপ্রিল দক্ষিণ কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র বইসরানে ভয়াবহ হামলা চালায় জঙ্গিরা। লস্কর-ই-তৈবার একটি শাখা, দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (TRF) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। ২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পর এটিই উপত্যকার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হামলা হিসেবে ধরা হচ্ছে।
এই হামলার পর কড়া কূটনৈতিক পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত সরকার। পাকিস্তানের সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু জলচুক্তি আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে, পাশাপাশি বাতিল করা হয়েছে পাকিস্তানি নাগরিকদের দেওয়া সমস্ত ভিসা।
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই ইসলামাবাদে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার বলেন, “পাকিস্তানের ২৪ কোটি মানুষের জন্য জল প্রয়োজন। ভারত যদি জল সরবরাহ বন্ধ করে দেয়, তা যুদ্ধ ঘোষণার সামিল হবে। ভারত যদি হামলা করে, তাহলে পাকিস্তানও উপযুক্ত জবাব দেবে।”
পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠকেও একই সুরে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বে বৈঠকের পর বলা হয়, “ভারতের পক্ষ থেকে জলপ্রবাহ রোধ বা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা যুদ্ধ ঘোষণার মতো অপরাধ হবে।”
এছাড়াও, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মহম্মদ আসিফ অভিযোগ করেছেন, ভারত পাকিস্তানে হামলার পরিকল্পনা করছে। তাঁর মতে, “আমাদের নাগরিকদের ক্ষতি করলে ভারতও কোনোভাবে রেহাই পাবে না। বদলা হবে প্রতিপালিত বদলা।”
ভারতের পক্ষ থেকে এসব মন্তব্যকে চরম দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দেওয়ার সামিল বলে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। সরকারের এক শীর্ষকর্তা মন্তব্য করেন, “পাকিস্তানের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে তারা এখনও জঙ্গিদের আশ্রয় ও সহায়তা দিচ্ছে।”
Comments are closed.