রিভিউ পিটিশনের আগে বেরোবে না তালিকা, জানিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যোগ্যদের বেতন দেওয়া হবে বলে বার্তা ব্রাত্যর। চাকরিহারাদের প্রশ্ন , যোগ্য অযোগ্য ফারাক না করতে পারলে কিভাবে আনটেন্টেড (যোগ্যদের) বেতন দেবে সরকার? তালিকা প্রকাশ যখন সম্ভব নয় তখন কী অযোগ্যদেরও বেতন দেবে সরকার ? প্রশ্ন চাকরিজীবীদের ।
মাঝরাতে চাকরিজীবীদের সমর্থনে এসএসসি ভবনের সামনে জড়ো হন বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তাররাও । তারা চাকরিহারাদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে খাবার ও জল বিতরণ করেন।
বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মাঝ রাতে চাকরিহারাদের এসএসসি ভবনের সামনে থেকে রাস্তা না ছাড়ার বার্তা দেন । অভিজিৎ বলেন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সঙ্গে তালিকা প্রকাশ না করার কোনও সম্পর্ক নেই । এর পরই প্রাক্তন বিচারপতি চাকরিজীবীদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার বার্তা দেন । রাত যত বাড়ল চাকরিপ্রার্থীরা রাস্তাতেই এসএসসি ভবনের সামনে কাগজ পেতে সুয়ে পড়েন ।
রাত ২ বেজে ২০ মিনিট নাগাদ এক গাড়ি জল নিয়ে বিক্ষোভকারীদের মাঝে পৌঁছলেন বিজেপি নেতা সজল ঘোষ। সজল বলেন, তালিকা প্রকাশ করলে অনেক তৃণমূল নেতার অবস্থা ছাল ছাড়ানো মুর্গির মত হয়ে যাবে। পাশাপাশি জল ও খাবার নিয়ে আন্দোলনকারী চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়ালেন ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রান্ট ।
জুনিয়র ডাক্তার দেবাশিষ হালদারকেও দেখা যায় এসএসসি ভবনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে । এসএসসি ভবনের সামনে থেকে করুনাময়ী ও উইপ্রো মোড়ের রাস্তা কার্যত অবরুদ্ধ ।
সোমবার সন্ধে ৭টার পর থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকে এপিসি ভবনের সামনে। তালিকা প্রকাশের দাবি করে বিক্ষোভ শুরু করেন চাকরিহারারা । এর আগে ১৩ এপ্রিল শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু চাকরি হারানোর সঙ্গে বৈঠকের পর আশ্বাস দেন যোগ্য অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করা হবে ।
তবে ঘড়ির কাঁটা রাত ৯টা পেরিয়ে গেলেও এসএসসি ভবন থেকে তালিকা প্রকাশ করা হয়নি । চাকরিহারারা ঘোষনা করেন তারা এবার ফাইনাল ম্যাচ খেলতে নেমেছেন। আন্দোলনকারীরা জানিয়ে দেন তালিকা প্রকাশ না করলে তারা এপিসি ভবন ঘেরাও করে রাখবেন । এসএসসি চেয়ারম্যান সহ কোনও আধিকারিকদের তাঁরা বেরোতে দেবেন না । এরপরই বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয় এপিসি ভবনের সামনে । পুলিশ গার্ড রেল দিয়ে এপিসি ভবনের মেন গেট ঘিরি ফেলে । বাইরে চাকরিপ্রার্থীরা তাদের ঘেরাও চালিয়ে যায় ।
রাত ১১ টা পেরিয়ে গেলেও তালিকা প্রকাশ নিয়ে এসএসসির তরফে কোনও বার্তাই এল না । রাত যত বাড়ল ততই চাকরিজীবীদের তালিকা প্রকাশের পক্ষে দাবি আরও জোরালো হতে থাকে। দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে বচসা শুরু হয় চাকরিহারাদের । গার্ড রেল ভেঙে এপিসি ভবনের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের আটকে দেয়।
ঘড়ির কাঁটায় রাত ১২ টা। এপিসি ভবনে ঘেরাও হয়ে রয়েছেন এসএসসি চেয়ারম্যান ও আধিকারিকরা। চেয়ারম্যনানের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হল, যারা কাজ করেছেন তারা বেতন পাবেন। ২০১৬ এর শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে খুব স্পষ্ট স্কুল সার্ভিস কমিশন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে চলতে বাধ্য।। সুপ্রিম কোর্ট গাইড লাইন মেনেই চলবে কমিশন ।
এর পরেই চাকরিহারাদের আন্দোলনের ঝাঁঝ আরও বাড়ল । তালিকা প্রকাশ করতেই হবে , নিজেদের দাবিতেই অনড় রইলেন চাকরিহারারা।
Comments are closed.