নির্বাচনের আবহে বাংলার বুকে সন্দেহভাজন জঙ্গি গ্রেফতার, বেঙ্গালুরুর রামেশ্বরম কাফে বিস্ফোরণে অভিযুক্ত দুই মাস্টারমাইন্ডকে গ্রেফতার করল NIA
রাজ্যের প্রথম দফার নির্বাচনের আর মাত্র হাতে গোনা কয়েকটি দিন বাকি। আর এমন এক মুহূর্তে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থেকে গ্রেফতার দুই সন্দেহভাজন জঙ্গি। ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বা এনআইএ (NIA) এদের গ্রেফতার করেছে। এনআইএ যে প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে তাতে জানা গিয়েছে এই দুই জন বেঙ্গালুরুর রামেশ্বরম কাফে বিস্ফোরণকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড। গ্রেফতার হওয়া দুই সন্দেহভাজন জঙ্গির নাম মুসাবির হুসেন সাজিব এবং আব্দুল মাথিন আহমেদ। বিস্ফোরণকাণ্ডের পর থেকেই আত্মগোপন করেছিল এই দুই জন।
এনআইএ জারি করা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে যে বিস্ফোরণের পরই একের পর এক ঠিকানা বদল করে গিয়েছিল মুসাবীর হুসেন সাজিব এবং আব্দুল মাতিন ত্বহা। এই দুজনেই প্রথমে কর্ণাটক সেখান থেকে তেলেঙ্গানা এবং কেরালায় আত্মগোপম করেছিল। কেরালা থেকে পরে মুসাবীর ও আব্দুল কলকাকাতায় পালিয়ে আসে বলে জানিয়েছে এনআইএ। কলকাতাতেও লাগাতার ঠিকানা বদল করে গিয়েছিল দুজনে। শেষমেশ মুসাবীর ও আব্দুল– কাঁথিতে আত্মগোপন করেছিল। এই কাঁথিতেই শুক্রবার সকালে একযোগে অভিযান চালায় এনআইএ ও রাজ্য পুলিশ।
এনআইএ যে বিবৃতি দিয়েছে সেখানে আরও দাবি করা হয়েছে যে, মুসাবীর ব্যাকপ্যাকের মধ্যে রাখা বিস্ফোরককে রামেশ্বরম কাফের প্রবেশপথে রেখেছিল। কীভাবে বিস্ফোরণ ঘটানো হবে, নাশকতার ব্যপকতা কতচা থাকবে এবং বিস্ফোরণের পর তারা কীভাবে আত্মগোপন করতে হবে-এই পরিকল্পনাটা করেছিল আব্দুল মাথিন ত্বহা।
বেঙ্গালুরুর রামেশ্বরম কাফে বিস্ফোরণে মুসাবীর ও আব্দুলের গ্রেফতারির আগেও এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। মার্চের শেষ সপ্তাহে মুজ্জামিল শরিফ নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। মুসাবীর ও আব্দুলের নাশকতাকে সমর্থন দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে শরিফের বিরুদ্ধে।
কর্ণাটকের শিবামোগ্গা জেলায় বাড়ি মুসাবীর ও আব্দুলের। এই দুজনের খোঁজে এনআইএ এখনও পর্যন্ত দেশজুড়ে মোট ১৮টি জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছিল। যারমধ্যে কর্ণাটক, উত্তরপ্রদেশ এবং তামিলনাড়ুর একাধিক জায়গা রয়েছে। ১ মার্চ বেঙ্গালুরুর রামেশ্বরম কাফে বিস্ফোরণে কাফের কর্মী সহ মোট ১০ জন জখম হয়েছিলেন। ভাগ্য ভাল যে এই বিস্ফোরণে একজনেরও মৃত্যু হয়নি। কারণ, বিস্ফোরক রাখার সময় একটি মোটা থামের আড়ালে তা রেখেছিলেন মুসাবীর। যার ফলে বিস্ফোরণের তীব্রতা ওই মোটা থাম সহ্য করে নিয়েছিল। বিস্ফোরণের পর অভিযুক্তদের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করা হয়েছিল। এএই ফুটেজে এক মাস্ক পরা ব্যক্তিকে একটি ব্যাকপ্যাককে মোটা থামের আড়ালে রাখতে দেখা গিয়েছিল। এনআইএ-র দাবি, এই ব্যক্তি আসলে মুসাবীর। বিস্ফোরক রাখার পর মুসাবীরকে বাসে উঠে চলে যেতেও দেখা গিয়েছিল।
বেঙ্গালুরুর রামেশ্বরম কাফে বিস্ফোরণে অভিযুক্তদের খোঁজ দেওয়ার জন্য ১০ লক্ষ টাকার পুরস্কারও দাবি করা হয়েছিল। এরপর মুসাবীর ও আব্দুলের কলেজের বন্ধু এবং পরিচিতদের কার থেকেও তথ্য সংগ্রহ করেছিল পুলিশ ও এনআইএ।