Loksabha Election 2024: এবার কি অধীরের হাতছাড়া হতে পারে বহরমপুর, কী বলছে ভোটের অঙ্ক! এক নজরে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্র
মালদহের মতোই বাংলায় কংগ্রেসের আরেক গড় বহরমপুর, এখনও অবধি টানা ২৫ বছর নিজেদের সেই দুর্গ ধরে রেখেছেন রাজ্যে কংগ্রেসের ‘দুয়ারপাল’ অধীররঞ্জন চৌধুরী। অধীরের আগে এই আসনে চিরকাল জয়ী হয়েছে বামফ্রন্টের আরএসপি। মাঝে মাত্র ১ বার ১৯৮৪ সালে জয় পেয়েছিল কংগ্রেস। তা ছাড়া এই আসনে আর কোনও দল খাতা খুলতে পারেনি এখনও অবধি। তবে খাতা খুলতে না পারলেও বদলেছে অঙ্ক। ১৯৯৯ সাল থেকে টানা ৫ বার এই আসন থেকে জিতে সংসদ ভবনে নিজের জায়গা পাকা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। ২০১৯ সালে জয়ের পরে লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা হয়েছেন অধীর। তিনি এমন এক রাজনীতিক যার সমন্ধে বিরোধী দল হলেও প্রশংসায় পঞ্চমুখ স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এই আসনে এই বার তৃণমূল কলকাতা নাইট রাইডার্সের অলরাউন্ডার খেলোয়াড় ইউসুফ পাঠানকে প্রার্থী করে চমক দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেকেআর –এ খেলার সুবাদে বাংলায় তাঁর ভক্তের সংখ্যা নেহাত কম নয়। তার উপর তিনি আবার সংখ্যালঘু। আর বহরমপুরের একটা বড় ভোট যে সংখ্যালঘু তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যদিও অধীরের খাতায় ভোট আসে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষেই।
অধীর দুর্গ ভাঙতে বিজেপির ভরসা এলাকার পরিচিত চিকিৎসক নির্মল সাহা। এমনিতে বিজেপির ভরসা থাকে সাধারণত হিন্দু ভোটের উপরেই। তবে এ ক্ষেত্রে অঙ্কটা একটু আলাদা। হিন্দু ভোট তো বটেই তার সঙ্গে রোগী বৎসল চিকিৎসক হিসাবে নির্মল সাহার ব্যাক্তিগত সুনামের কারণে সংখ্যালঘু ভোট ঝুলিতে আসতে পারে বলে ধারণা।
অন্যদিকে শেষ ভোটের অঙ্কের দিকে তাকালেও চিন্তায় পড়তে হয় কংগ্রেসকে। ২০১৪ সালে যেখানে অধীরের জয়ের ব্যবধান ছিল তিন লাখের বেশি সেখানে ২০১৯ সালে তা কমে হয়ে যায় ৮০ হাজারের সামান্য বেশি। ২০১৯ সালে তৃণমূলের প্রার্থী ছিল একদা অধীরের শিষ্য অপূর্ব সরকার তথা ডেভিড। শতাংশের হিসাবের দিকে তাকালে শেষ লোকসভা ভোটে অধীরের ঝুলিতে ছিল ৪৫.৯৭% ভোট, আর দ্বিতীয় স্থানে শাসক দল তৃণমূলের ঝুলিতে ছিল ৩৯.৬৯% ভোট। আবার লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ভোট মাত্র ১১.১২% থাকলেও বিধানসভা খানিকটা হলেও বদলেছে অঙ্ক। বহরমপুর বিধানসভাতেই পদ্ম ফোটায় বিজেপি। ২০২১ ভোটের দিকে তাকালে আবার প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে তৃতীয় কংগ্রেস। যদিও বাংলায় বিধানসভা এবং লোকসভা ভোটের অঙ্কে বেশিরভাগ সময়ে ফলাফল মেলে না বললেই চলে। আবার বিরোধীদের বহরমপুর জেতার দাবিকে নস্যাৎ করে অধীরের দাবি এই আসনে জিততে না পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন তিনি। তবে লড়াই যে ত্রিমুখী এবং আসন ধরে রাখতে যে বেশ তৎপর অধীর তা স্পষ্ট। এখন দেখার হাত, পদ্ম নাকি জোড়াফুল কাকে বেছে নেয় বহরমপুর।