Loksabha Election 2024: দিলীপের দক্ষতা নাকি কীর্তির ক্যারিশ্মা শিল্পাঞ্চলে শেষ কথা বলবে কে, নজরে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্র
পশ্চিমবঙ্গে নতুন লোকসভা আসনগুলির মধ্যে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্র একটি। ২০০৯ সালে আসন পুনর্বিন্যাস হলে ৭টি বিধানসভা আসন নিয়ে জন্ম হয় এই লোকসভা কেন্দ্রের। বর্ধমান দক্ষিণ, মন্তেশ্বর, বর্ধমান উত্তর, ভাতার, গলসি, দুর্গাপুর পূর্ব এবং দুর্গাপুর পশ্চিম। সেই দিক থেকে দেখতে গেলে শিল্পাঞ্চলে এই বার চতুর্থ লোকসভা নির্বাচন। ২০০৯ সালে আসন পুনর্বিন্যাসের পরে বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনে জয় পেয়েছিল বামেরা। তবে তার পরের নির্বাচনেই পাষা পালটায়। এই আসনে ঘাসফুল ফোটায় তৃণমূল প্রার্থী মমতাজ সঙ্ঘমিত্রা।
তবে তাও স্থায়ী হয়নি। ২০১৯ বাংলায় বিজেপির যে জয় রথ বেরিয়েছিল তাতে সঙ্গী ছিল বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্র। দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে ২০১৪ সালে জয়ী হওয়া এসএস আহলুয়ালিয়াকে এই কেন্দ্রে ২০১৯ সালে প্রার্ত্থী করে বিজেপি। কানঘেঁষে হলেও ২৪৩৯ ভোটে তৃণমূলের মমতাজকে পরাজিত করেন আহলুয়ালিয়া। সেই ভোটের বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ছিল ৪১.৭৫% এবং তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৪১.৫৮%।
তবে তার পর সময় বদলেছে। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে ৭টির মধ্যে ছটি বিধানসভায় জয় পায় শাসক দল। বিজেপি জয় পায় কেবল একটি আসনে তা হল দুর্গাপুর পশ্চিম। এলাকায় কান পাতলেই শোনা যায় বিদায়ী সাংসদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ। তাই এইবারে তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে। বদলে দল ভরসা রেখেছে পুরনো চালেই। তিনি হলেন দিলীপ ঘোষ। যার নেতৃত্বে ২০১৯ সালে বাংলায় বিপুল জয় পেয়েছিল বিজেপি। যিনি রাজনীতির ময়দানে ঠোঁটকাটা বলেও পরিচিত। বার বার বিতর্ক জড়িয়েছেন এমনকি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের রোষে পড়ে হারাতে হয়েছে রাজ্য সভাপতির পদও। সেই তিনিই এবার এই আসনে বিজেপির প্রার্থী। দিলীপের সাংগাঠনিক দক্ষতা এবং তাঁর প্রতি মানুষের গ্রহণযোগ্যতাকেই হাতিয়ার করে এই আসনে মাঠে নেমেছে বিজেপি।
বিপরীতে তৃণমূলের প্রার্থী বিশ্বকাপ জয়ী প্রাক্তন ক্রিকেটার কীর্তি আজাদ। তবে কেবল প্রাক্তন ক্রিকেটার নয়, তিনি আবার প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ এবং প্রাক্তন কংগ্রেস নেতাও বটে। বিজেপির শীর্ষ নেতা প্রয়াত অরুণ জেটলির নামে প্রকাশ্যে কুকথা বলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কোপে পড়েন কীর্তি। তারপরেই কংগ্রেসে যোগ দেন। কিন্তু সেখানেও ভোটে লড়ে পরাজয় স্বীকার করতে হয় তাঁকে। শেষে মুখ্যমন্ত্রীর ডাকে তৃণমূলে যোগ দেন ২০২১ সালে। ভোটের ময়দানে নামতেই তাই তাঁকে বহিরাগত বলে নিশানা করেছে বিজেপি। অন্যদিকে বিজেপি প্রার্থীকে ‘মহিষাসুর’ বলে আক্রমণ করেছেন তৃণমূল প্রার্থী। এই কেন্দ্রে জোট সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী সুকৃতি ঘোষাল। অবশ্য ২০১৯ সালের বাম-কংগ্রেসের ভোট মেলালে সংখ্যা দাঁড়ায় ১৩.৯৫%। তাই শিল্পাঞ্চলে লড়াই দুই ফুলের বললে খুব একটা ভুল হবে না। এখন দেখার এই ভোটে কে বাজিমাত করবে। দিলীপের সাংগাঠনিক দক্ষতা নাকি কীর্তির ক্যারিশ্মা!