Loksabha Election 2024 : Phase 2- ২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনে দার্জিলিঙে জয়ী হয়েছিল বিজেপি, কীভাবে পিছনে পড়েছিল মোর্চা প্রার্থী, ফলাফল একনজরে
দ্বিতীয় দফাতেও নজর বাংলার ৩ আসনে। দার্জিলিং-রায়গঞ্জ-বালুরঘাট। গত লোকসভা নির্বাচনে ৩ আসনেই পদ্ম ফুটেছিল। এমনকি রায়গঞ্জ থেকে জিতে মোদীর মন্ত্রীসভায় ঠাই পেয়েছিলেন সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী। আবার তেমনই বালুঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের হাতে উঠে এসেছে রাজ্য বিজেপির দায়িত্ব। তবে দ্বিতীয় দফায় ভোটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আসন দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্র। বহু চেষ্টার পরেও পাহাড়ে ঘাসফুল ফোটাতে ব্যর্থ শাসক শিবির। দার্জিলিঙে বিদায়ী সাংসদ রাজু বিস্তাকে এই বারেও প্রার্থী করেছে বিজেপি। তৃণমূলের প্রার্থী গোপাল লামা। কিন্তু কেমন ছিল ২০১৯ সালের ছবিটা?
প্রথমেই বরং নজর দেওয়া যাক পাহাড়ের দিকে। ২০১৯ এই আসনে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন রাজু বিস্তা। অপর দিকে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন অমর সিংহ রাই। তবে পাহাড়ে জিততে গেলে প্রয়োজন পাহাড়ি দলের সমর্থন। এই কথা বিলক্ষণ জানেন রাজনীতির কারবারিরা। বাম, কংগ্রেস হোক বা বিজেপি যেই দখল যখন জিতেছে সঙ্গে ছিল পাহাড়ি দলের সমর্থন। তবে পাহাড়ের সব থেকে শক্তিশালী বলে পরিচিত বিমল গুরুঙের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সমর্থন নিয়েও ভাগ্যের শিকে ছিঁড়তে পারেনি শাসক দল। এ ক্ষেত্রে যেন বার বার মেঘের দেখা মিলেছে তৃণমূলের। গত তিন লোকসভা নির্বাচনেই দার্জিলিং কেন্দ্রে পদ্ম ফুটেছে। ২০০৯ সালে এখানে বিজেপির টিকিটে জয়ী হন যশোবন্ত সিংহ। ২০১৪ সালে প্রার্থী হন এসএস অহলুয়ালিয়া। তারপর ২০১৯ সালে সুবাস ঘিসিংয়ের গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্টের সমর্থনে সাংসদ হন বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তা।
দার্জিলিং যেন বার বার খালি হাতে ফিরিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ২০১৪ সালে অশান্ত পাহাড়কে শান্ত করতে তৃণমূল প্রার্থী করেছিল জাতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক বাইচুং ভুটিয়াকে।
এরপর ২০১৯ সালে সেই আসন জিততেই যে বিমল গুরুংকে তিনি জঙ্গী বলে আক্রমণ করেছিলেন সেই গুরুঙের হাত ধরেন মমতা। কিন্তু ভাগ্য এবারেও ফেরেনি। ৪,১৩,৪৪৩ ভোটে জয়ী হন রাজু। ২০১৯ সালে বিজেপির প্রাপ্ত ভোটের পরিমাণ ৫৯.১৯ শতাংশ এবং তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট ২৬.৫৬ শতাংশ।
কিন্তু গত বিধানসভা নির্বাচনের আবার পরিবর্ত্ন দেখে পাহাড়। তৃণমূলের উপর একটু হলেও সদয় হয় দার্জিলিং। বিজেপি প্রাপ্ত ভোট কমে হয় ৪৩.৬৮ শতাংশ। তৃণমূলের ভোট বেড়ে হয় ৩১.৩৭ শতাংশ। ২০১৯ লোকসভা ভোটের ফলাফলের নিরীখে বিজেপি এগিয়েছিল ছ’টি বিধানসভা কেন্দ্রে। আর তৃণমূল জেতে কেবল একটি বিধানসভা চোপড়ায়। তবে ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে চোপড়া তৃণমূল ধরে রাখার পাশাপাশি দলের সমর্থিত বিজিপিএম প্রার্থীও জয় পান কালিম্পঙে। তাই পাহাড়ের রাজনীতি যে এই ভোটে একটু হলেও তৃনমূলের পক্ষে তা বলা যেতে পারে।
এই বার অবশ্য বিজেপির সমর্থনে গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্টের সঙ্গেই রয়েছে বিমল গুরুং এবং তাঁর গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাও। আর অন্য দিকে তৃণমূলের সমর্থনে রয়েছে অনীত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। এই বার বিজেপি ভোটে জিতলে আবার নতুন রেকর্ড। এই প্রথম কোনও রাজনৈতিক দল পর পর ৪ বার জয়ী হবে দার্জিলিঙে। তবে বিজেপির জয়ে বাঁধা হয়ে উঠতে পারে বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতা কার্শিংয়াঙের বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। তাঁর দাবি ছিল মণিপুরের রাজু বিস্তার বদলে প্রার্থী করা হোক কোনও ভূমিপুত্রকে। কিন্তু সেই দাবি দল না মানায় নিজেই নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছেন ভোটে। এই আসনে জোট প্রার্থী হয়েছেন বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী মুনীশ তামাং। অন্য দিকে বিজেপিকে ছাপিয়ে গোপাল লামা ঘাস ফুল ফোটাতে পারে কিনা সেটাই দেখার।