Loksabha Election 2024: মতুয়া ভোটেই ঝুলছে ভাগ্য, শিকে ছিড়তে মরিয়া ঘাস-পদ্ম দুই ফুল, নজরে রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্র
নদীয়া জেলার সাবেক নবদ্বীপ আসন ভেঙে ২০০৯ সালে জন্ম রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের। আসন ভাঙার আগে এই আসনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়ে এসেছে বামেরা। তবে তাল কাটে ১৯৯৯ সালে। জয়ী হয় তৃণমূল-বিজেপি জোট সমর্থিত তৃণমূল প্রার্থী। তবে তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। সাংসদ আনন্দমোহন বিশ্বাসের মৃত্যুর পরে উপ নির্বাচনে নবদ্বীপ আসনে পুনরায় জয় পায় বামেরা। এরপর নবদ্বীপ ভেঙে রানাঘাট জন্মালেই দখল নেয় তৃণমূল। সেই অর্থে দেখলে রানাঘাটের জন্মলগ্ন থেকেই তৃণমূলের আধিপত্য। এরপর ১০ বছর আর ভাবতে হয়নি।
মুশকিল হল ২০১৯ সালে। ২ লাখ ৩৩ হাজারের বেশি ভোটে তৃণমূলের থেকে রানাঘাট ছিনিয়ে নেয় বিজেপির জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। এই বারেও প্রার্থী তিনিই। অন্যদিকে তৃণমূলের প্রার্থী একদা বিজেপির বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারি। তবে পিছন দিকে তাকালে দেখা যায় বিজেপির টিকিটে গত লোকসভাতেই প্রার্থী হওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু এই বারে বীরভূমে দেবাশিসের মতোই রাজ্য সরকারের চাকরি ছাড়ার পরেও নো অবজেকশন সার্টিফিকেট না পাওয়ায় সেই সুযোগ হাতছাড়া হয় তাঁর। তারপর ২০২১ সালে বিজেপির টিকিটে বিধায়ক হ্ন মুকুটমণি। তবে ২০২৪ –এ লোকসভার টিকিট পাবেন না বুঝেই দল বদলে ঘাসফুলে নাম লেখান তিনি। সিপিএমের প্রার্থী দুবারের প্রাক্তন সাংসদ অলকেশ দাসকে।
এত গেল প্রার্থী পরিচয়, তবে রাজনীতির কারবারিরা বিলক্ষ্যণ জানেন রানাঘাটে জয় পেতে হলে সঙ্গে চাই মতুয়া সম্প্রদায়কে। না হলেই বিধি বাম। ২০১৯ সালে যে বিজেপির জয়ের কারণ মতুয়া ভোট তা বেশ ভালোই জানেন শাসক-বিরোধীরা। সেই ভোটে বিজেপি পেয়েছিল ৫৩.১১ শতাংশ ভোট, তৃণমূল প্রার্থীর ঝুলিতে ছিল ৩৭.২৮ শতাংশ ভোট। সেখানে বাম-কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোট যোগ করলে সংখ্যাটি দাঁড়ায় ৮.২১ শতাংশে। গত বিধানসভা ভোটের হিসেব বলছে এই লোকসভা ভোটের ৭টির মধ্যে ছটিতে জয় পেয়েছিল তৃণমূল। একমাত্র নবদ্বীপে জয় পায় তৃণমূল। পরে উপনির্বাচনে শান্তিপুর বিধানসভা দখল করে শাসক দল। তবে এই ৭টির মধ্যে চার কেন্দ্রে মতুয়া ভোটের আধিক্য বেশি। বাকি কেন্দ্রে আধিক্য না থাকলেও একটা বড় অংশে মতুয়া সম্প্রদায়ের বাস। ২০২১ সালেও বিজেপির জয়ের পিছনে ছিল সেই মতুয়া ভোট। সিএএ ইস্যুতে গত ভোটে বিজেপি মতুয়া ভোট টেনেছিল নিজেদের দিকে। সেই বার পাশে ছিল মুকুটমণি। তবে এই বার তাঁরা প্রতিপক্ষ। আবার তার উপরে মুকুটমণি নিজেই মতুয়া। তাই মতুয়া ভোট কে কতটা টানতে পারবে তা বলবে সময়। তবে ভাগ্য যে সেখানেই নির্ভর করছে তা বেশ ভালই জানেন এক কালের দুই সহকর্মী।