শুধুমাত্র চমককেই গুরুত্ব। যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে আদৌ কি চিন্তিত ভারতীয় রেল? কাঞ্জনজঙ্ঘা দুর্ঘটনার পর রেলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগই জোরালোভাবে উঠে পড়েছে। রেলের আধুনিকীকরণের প্রতিশ্রুতিও সেভাবে পূরণ হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই এক দুর্ঘটনায়, যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে বহু প্রশ্নে বিদ্ধ রেল।
২০১৬-২০১৭ সালে রেলের সংঙ্কল্প ‘মিশন জ়িরো অ্যাক্সিডেন্ট’। সেই সংকল্প মেনে ২০১৯ সালে দুর্ঘটনা শূন্যে পৌঁছেছিল। তবে রেলের দুর্ঘটনার ‘গ্রাফ’ বলছে, বছর দুয়েক সেই ‘মিশন’ লাইনে চললেও ২০২২ সালের পর থেকে আচমকাই বেলাইন হয়ে গিয়েছে সংকল্প। ভারতীয় রেল দুর্ঘটনা ‘শূন্য’ তো হয়ইনি, উল্টে এক লাফে কয়েক ধাপ বেড়েছে রেল দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা।
জাঁকজমকে নিরাপত্তা উধাও!
২০২২-২০২৪
- ৪৯ রুটে চালু বন্দে ভারত এক্সপ্রেস
- ২৩ রেল দুর্ঘটনা
- রেল দুর্ঘটনায় ৩৭১ জনের মৃত্যু
দুর্ঘটনা এড়াতে সিগন্যালিং সিস্টেমে এবং দুর্ঘটনা প্রতিহত করতে সংকল্পে বলা হয়েছিল, এলএইচবি রেল বগি ও আধুনিক ইঞ্জিন ব্যবহার করা হবে। রাষ্ট্রীয় রেল সুরক্ষা কোষে ১ লক্ষ কোটি টাকা নির্ধারণও করেছিল। পাঁচ বছর ধরে ওই অর্থ খরচ করা হবে রেল সুরক্ষার স্বার্থে। কিন্তু চার বছর পর ২০২১ সালে দেখা গেল পরিস্থিতির উন্নতি তো হয়ইনি, বরং অবনতি হতে শুরু করেছে।
কাকতালীয়ভাবে, ২০২২ সালের শেষ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গোটা দেশে অজস্র প্রিমিয়াম ট্রেন পরিষেবা চালু হয়। তাহলে কী জাঁকজমকেই জোর দিতে গিয়ে নিরাপত্তাতেই নজর হারিয়েছে রেল। কোথায় গেল অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস। কোথায় গেল এলএইচবি কোচ।
এলএইচবি হল দুর্ঘটনা প্রতিরোধক বগি। এই বগি থাকলে সামনাসামনি দুই ট্রেনের ধাক্কা লাগলে একটি কামরা আর একটি কামরায় ঢুকে যায় না। এমনকি, একটি কামরা আর একটির উপরে উঠেও যায় না। ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে গেলে কামরাগুলি যেমন তেমন ভাবে উল্টেপাল্টে যায় না। যেমনটা কাঞ্চনজঙ্ঘায় হয়েছে!
বুলেট এবং বন্দে ভারতের মতো প্রিমিয়াম ট্রেনের স্বপ্নে বন্দিত ভারতীয় রেল কাঞ্চনজঙ্ঘার মতো ট্রেনের সাধারণ যাত্রীদের প্রাথমিক সুরক্ষা দিতে কি ব্যর্থ হচ্ছে।