১ আগস্ট থেকেই বাড়ল GMCH-এর সব ধরণের চিকিৎসা পরিষেবার মাশুল। বিষয়টি নিয়ে রাজ্যজুড়ে তুমুল প্রতিক্রিয়া। GMCH-এর অধ্যক্ষের মতে, ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
যতটুকু সম্ভব নিজেকে সুস্থ রাখুন। হাসপাতালে না যাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। জ্বর, কাশি, হাত-পা যাতে না ভাঙে সে জন্য সতর্ক থাকুন। কারণ সরকারি হাসপাতালেও এখন আর সুলভ নয় চিকিৎসা পরিষেবা। আয়ুষ্মান কার্ডের পরিষেবা সীমিত করে এবার দাম বাড়ানো হল চিকিৎসা মাশুলের।
১ আগস্ট থেকে GMCH-এ বাড়ল চিকিৎসা পরিষেবার মাশুল
বাড়ল ১০৫ ধরনের প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার মাশুল
PP ব্লাড সুগার পরীক্ষার মাশুল ৩০ টাকা থেকে বেড়ে হল ৫০ টাকা
আগে LF পরীক্ষার মাশুল ছিল ৪১০ টাকা
বর্তমানে LF পরীক্ষার মাশুল বেড়ে হল ৯০০ টাকা
৯০ টাকার প্রোটিন অ্যান্ড ফাংশন টেস্ট এখন বেড়ে হল ৩০০ টাকা
২৪ ঘণ্টার ইউরিন প্রোটিন পরীক্ষার মাশুল ৭৫ টাকা থেকে বেড়ে হল ১৫০ টাকা
৭০ টাকার ALP পরীক্ষার মাশুল বেড়ে হল ১৫০ টাকা
ANA প্রোফাইল ৩০০০ টাকা থেকে বেড়ে হল ৩৫০০ টাকা
সেরাম TSH-এর মাশুল ২০০ টাকা থেকে বেড়ে হল ৩০০ টাকা
লিপিড প্রোফাইল ৩৬৫ থেকে বেড়ে হল ৫০০ টাকা
আয়রন প্রোফাইল ৬৬০ টাকা থেকে বেড়ে হল ১১০০ টাকা
মাশুল বৃদ্ধির এই তালিকা বেশ বড়। তালিকা দেখলে আপনার জ্বর আসবে। শুধু তাই নয়, পঞ্জীয়ন ও সাধারণ বেডের দাম বাড়ল ১০ টাকা
২২ বছর পর চিকিৎসা পরিষেবার মাশুল বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই বর্ধিত মূল্য সাধারণ মানুষের জীবনে কী প্রভাব ফেলতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। অসুস্থ হলেই দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল হয়ে পড়ে সরকারি হাসপাতাল। সেই হাসপাতালের মাশুল বৃদ্ধি কী এতটুকু জরুরি ছিল? বিষয়টি নিয়ে GMCH-এর অধ্যক্ষ অভিজিৎ শর্মা বলেন, ‘সরকার ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে’।
‘আপনারা ভাবুন ৪০ টাকার পরীক্ষার মান কী হতে পারে? এখানে হোক কিংবা বাইরে পরীক্ষার সব উপকরণ একই। তাহলে আমরা কীভাবে ঘাটতি দিয়ে পরীক্ষা করব? এতদিন আমরা লোকসানে পরিষেবা দিয়েছি। কিন্তু এখন সরকার খুব ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্বাবলম্বী হতে হবে। আমাদের পরিষেবার মান উন্নত করতে হবে। আমরা পরিষেবা আরও উন্নত করার চেষ্টা করছি। মানুষ যাতে হাসপাতালে এসে বলেন, হাসপাতালটি খুবই স্বচ্ছ। মানুষকে যাতে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়াতে না হয়। সবকিছু অনলাইন হতে হবে।’
সরকারি চিকিৎসালয়ের মানুষের অনীহা নতুন কিছু নয়। এবার বাড়ল চিকিৎসা পরিষেবার মাশুল। চিকিৎসকের শূণ্যপদ পূরণ, পরিষেবা উন্নত করা নিয়ে বিভিন্ন সময় দাবি উঠে। এ ব্যাপারে GMCH-এর অধ্যক্ষ অভিজিৎ শর্মা বলেন, ‘আপনারা বিষয়টিকে অনেক বড় করে দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের কথা হল, গতকাল সারাদিন আমার কাছে একজন লোকও এসে বলেনি যে দাম বেড়েছে। কারণ তাঁরা বাজারের দাম জানে।’এই ছিল অধ্যক্ষের মন্তব্য।
কিন্তু বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষ ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন, ‘সরকার তো সবদিক থেকেই চেপে ধরেছে। হিমন্তবিশ্ব শর্মা সরকার আর কী করবে? জনগণকে চাপে ফেলে সব কিছুর দাম বাড়াচ্ছে সরকার। সবকিছুতেই কর লাগিয়ে দিয়েছে। সরকার নিজে কিছু করতে পারছে না, আমাদের উপর শুধু বোজা চাপিয়ে দিচ্ছে।’
এক একটি রিপোর্টের জন্য দীর্ঘ সময় লাইনে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষকে এখন থেকে দিতে হবে অতিরিক্ত অর্থ। দরিদ্র, মধ্যবিত্তদের আর কত সমস্যায় ফেলবে সরকার? তাই বিষয়টি নিয়ে দেখা দিয়েছে বহু প্রশ্ন।
এই সিদ্ধান্ত আসলে কার জন্য? GMCH-এর দুটি MRI মেশিনের মধ্যে একটি বিকল। এরকম প্রেক্ষাপটে সবকিছুতেই প্রায় দ্বিগুণ মাশুল বৃদ্ধি।