আজ থেকে দেশজুড়ে কার্যকর নয়া তিনটি ফৌজদারি আইন। মুছে যাচ্ছে ব্রিটিশ আমলের নিয়ম। ব্রিটিশ আইনে এতো দিন সাজার কথা বলা ছিল। এবার নতুন আইনে সাধারণ মানুষ যাতে ন্যায় পান সেই ভাবনাই প্রকাশ পেয়েছে।
আর এই আইন কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দায়ের হল প্রথম এফআইআর। নতুন ফৌজদারি আইনের আওতায় প্রথম এফআইআর দায়ের হল দিল্লির এক হকারের বিরুদ্ধে। হকারের বিরুদ্ধে কমলা মার্কেট থানায় মামলা রুজু। অভিযুক্ত হকারের নাম পঙ্কজ কুমার। তিনি বিহারের পটনার বাসিন্দা। নয়াদিল্লি রেল স্টেশনের কাছে একটি রাস্তা ঘিরে ব্যবসা চালানোর জন্য তাঁর বিরুদ্ধে নতুন ফৌজদারি আইনের ২৮৫ ধারার অধীনে পুলিশ এফআইআর দায়ের করেছে বলে খবর। ২৮৫ ধারা অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি যদি তাঁর দখলে থাকা সম্পত্তির মাধ্যমে অন্যের যাতায়াতের পথে বাধা সৃষ্টি করেন বা আঘাতের কারণ হন, তা হলে শাস্তিস্বরূপ তাঁকে জরিমানা দিতে হবে।
ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম— এই তিনটি নতুন ফৌজদারি আইন আজ থেকে কার্যকর হয়েছে সারা দেশে। এর আগে এই ধারাগুলি ছিল ব্রিটিশদের তৈরি তিনটি আইনে। ইন্ডিয়ান পেনাল কোড (আইপিসি), কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডিওর এবং দ্য ইন্ডিয়ান এভিডেন্স এক্ট। ব্রিটিশ আমলের এই তিনটি আইন বাতিল করে নতুন এই তিনটি আইন চালু করা হলো।
স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর ভারতে নতুন আইন কার্যকর করা হয়েছে। মোদি সরকারের দাবি, ব্রিটিশ আইনে এতো দিন সাজার কথা বলা ছিল। এবার নতুন আইনে সাধারণ মানুষ যাতে ন্যায় পান সেই ভাবনা প্রকাশ পেয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, সবার জন্য দ্রুত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্যই এ পরিবর্তন করা হয়েছে।
‘ইন্ডিয়ান পেনাল কোড’ (ভারতীয় দণ্ডবিধি)-এর পরিবর্তে ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’, ১৮৯৮ সালের ‘ক্রিমিনাল প্রসিডিওর অ্যাক্ট’ (ফৌজদারি বিধি)-এর পরিবর্তে ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা’ এবং ১৮৭২ সালের ‘ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট’ (ভারতীয় সাক্ষ্য আইন)-এর বদলে ‘ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম’— এই তিনটি নতুন ফৌজদারি আইন কার্যকর হয়েছে সোমবার থেকে। তবে নতুন আইনে কী কী অপরাধ এবং তার শাস্তি হিসাবে কী বলা হয়েছে, তা নিয়ে ধন্দে আছেন অনেকেই। নতুন তিন আইনের বিরুদ্ধে একাধিক আপত্তি তুলে ধরেছে বিরোধী দলগুলিও। তার মধ্যেই নতুন ফৌজদারি আইনের আওতায় দায়ের হল প্রথম এফআইআর।