Hathras Stamped: FIR-এ নেই ভোলে বাবার নাম! বাবাকে বাঁচাতে চায় কারা? হাথরস কি নিছক দুর্ঘটনা? উঠছে প্রশ্ন
হাথরাসে এত মৃত্যুর দায় কার? প্রশাসন না আয়োজকদের? দোষারোপের আবহে নিখোঁজ ভোলে বাবা। নারায়ণ সাকার বিশ্ব হরি যার পায়ের ধূলো পেতেই না কি ‘হাথরাসে হাৎসা’!
ভাইরাল সেই ভিডিও, যেখানে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে পদপিষ্ট হওয়ার আগে ঠিক কি অবস্থা ছিল উত্তরপ্রদেশের হাথরাসের ওই ধর্মীয় সভায়! কাতারে কাতারে মানুষের ভিড়! প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, প্রায় ২.৫ লক্ষ ভক্ত সমাগম হয়েছিল ধর্মগুরু নারায়ণ সাকার বিশ্ব হরি ওরফে ভোলে বাবার পদধূলি নেওয়ার জন্য। যদিও অনুমতি ছিল ৮০ হাজার জমায়েতের। সেখান থেকেই হুড়োহুড়ি, এরপর মৃত্যুমিছিল! এত বড় সমাবেশের নিরাপত্তায় ছিলেন মাত্র ৪০ জন পুলিশকর্মী।
ভিড় সামাল দিতে ব্যর্থ হয় তাঁরা। কিন্তু কে এই ধর্মগুরু নারায়ণ সাকার বিশ্ব হরি ওরফে ভোলে বাবা? নেপথ্যে ধর্মগুরু নারায়ণ সাকার! স্বঘোষিত এই ধর্মগুরু উত্তরপ্রদেশেরই বাসিন্দা। ১৮ বছর ইউপি পুলিশের ‘ইনটেলিজেন্স ইউনিটের’ হেড কনস্টেবল ছিলেন। অনুগামীদের দাবি, অতীতে গোয়েন্দা বিভাগের হয়েও তিনি কাজ করেছেন। ধর্মীয় বাণী প্রচারের জন্য ১৯৯৯ সালে তিনি না কি গোয়েন্দার চাকরি ছাড়েন। চাকরি ছেড়ে সুরজ পাল হয়ে ওঠেন ভোলে বাবা। ভোলে বাবার নিজস্ব একটি নিরাপত্তাবাহিনী রয়েছে, নাম ‘নারায়ণী সেনা’।
যাঁর ধর্মীয় সভায় গিয়ে এত মৃত্যু সেই ভোলে বাবা কোথায়? স্বঘোষিত ধর্মগুরুর সন্ধান এখনও মেলেনি বলেই জানিয়েছে পুলিশ। ফুলরাই গ্রাম থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরত্বে মৈনপুরি এলাকায় আশ্রম ভোলে বাবার। পদপিষ্টের ঘটনার পর সেই আশ্রমেই গিয়েছেন তদন্ত কমিটির সদস্যেরা। কিন্তু সেখানে গিয়ে ভোলে বাবার খোঁজ মেলেনি।
স্বঘোষিত ধর্মগুরু নিয়ে সামনে আসছে রাজনৈতিক যোগও। ২০২৩ সালে অখিলেশ সিং যাদবের একটি টুইটে দেখা যাচ্ছে তিনি ভোলেবাবার আশ্রমে গিয়েছিলেন। উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা ও রাজস্থানে রয়েছে ভোলে বাবার ভক্তরা। তাই ভোট পেতে উত্তরপ্রদেশের রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী ব্যক্তিরা প্রায়শই তাঁর ভোলে বাবার আশ্রমে যেতেন।
যোগী সরকার এই ঘটনাকে দুর্ঘটনা বললেও আদৌ এটি নিছক দুর্ঘটনা? না ছিল বিরাট প্রশাসনিক ব্যর্থতা? এত লোকের সমাগম জেনেও কেন পর্যাপ্ত পুলিশি ব্যবস্থা ছিল না! এমনকি NKTV বাংলার হাতে এসেছে একটি ভিডিও যেখানে দুর্ঘটনার পর এক ব্যক্তি চিৎকার করে অভিযোগ করছেন, হাসপাতালে আহতদের দেখার জন্য চিকিৎসক পর্যন্ত ছিল না।
ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। ঘটনাস্থলে পৌঁছে গোটা ঘটনার খোঁজখবর নিচ্ছেন তিনি। হাথরস নিয়ে সংসদে অমিত শাহের বিবৃতির দাবি জানিয়েছে বিরোধী দলের নেতারা।
রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের অভিযোগ, হাথরসে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে দুর্ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে এই ধরণের অনুষ্ঠানগুলিতে মানুষের সুরক্ষার জন্য কোনও আইন নেই। হাথরাসের ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে সরকার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেনি। দায়ী প্রশাসনি অবহেলা। কটাক্ষ সপা সাংসদ অখিলেশ সিং যাদবের।
হাথরসের বাসিন্দাদের একাংশের ক্ষোভ গিয়ে পড়েছে ভোলে বাবার উপর। তাঁর পোস্টার লক্ষ্য করে ছোঁড়া হচ্ছে ইট-পাথরও। এমন ঘটনার বেশ কিছু ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছে। স্থানীয় ও মৃতের আত্মীয়দের ক্ষোভের কারণ, এফআইআরে ‘সৎসঙ্গের আয়োজকদের নাম থাকলেও, সেই ভোলে বাবার নাম নেই। এখানেই প্রশ্ন, কারা ভোলে বাবাকে বাঁচাতে চাইছে?