দেশের মানুষ তৃতীয়বারের জন্য আস্থা রেখেছে নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন NDA সরকারের উপর। আর মোদী দেশের মানুষকে রক্ষা করার জন্য তৃতীয়বারের জন্য আস্থা রাখলেন সেই অজিত ডোভালের উপরেই। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পদে ফের বহাল করা হল অজিত ডোভালকে। বৃহস্পতিবার একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ডোভালকে পুনর্নিয়োগের কথা জানানো হয়েছে। ১০ জুন থেকে কার্যকর হয়েছে এই সিদ্ধান্ত বলেও জানানো হয়েছে ঐ নির্দেশিকায়।
উল্লেখ্য ২০১৪ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেই অবসর প্রাপ্ত আইপিএস অফিসারকে জাতীয় নিরাপত্তা বা ন্যাশানাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইসার(এনএসএ) পদে নিয়ে আসেন মোদী। তারপরে একে একে তাঁর নেতৃত্বে একাধিক বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। সার্জিকাল স্ট্রাইক থেকে কাশ্মীরে আইন পরিস্থিতি সামলানো তাঁকেই পিছনের ‘মাস্টার মাইন্ড’ বলে মনে করেন অনেকে। এমনকি তাঁর পদক্ষেপের জেরে ২০১৯ সালে ভোটেও বড় বেনিফিট পেয়েছিল মোদী সরকার।
নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসাবে কী কী করেছেন তিনি?
২০১৬ সালে উরিতে জঙ্গি হানার কথা ভুলে যাউনি কেউ। সেই স্মৃতি এখনও দগদগে রয়েছে দেশবাসীর মনে। কিন্তু তাঁর পরেই পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করে মোদী সেনাবাহিনী। যার নেতৃত্বে ছিলেন অজিত ডোভাল।
২০১৭ সালে ডোকলামে ভারত-চীন সম্পর্কের অবনতি ঘটে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছায় যে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয় দুই দেশের মধ্যে। সেই সময়ে আবারও আসরে নামেন ডোভাল। তাঁর হস্তক্ষেপে শান্ত হয় পরিস্থিতি, উন্নতি হয় দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের।
২০১৯ সালে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপিএফের কনভয়ে জঙ্গি হামলায় নিহত হন বহু জওয়ান। এরপরেই তাঁর পালটা জবাব দেয় ভারত। পাকিস্তানের বালাকোটে বিমানহানা করে জঙ্গি শিবির ধ্বংস করে ভারতের এয়ারফোর্স। শোনা যায় এর পিছনেও ছিলেন অজিত। ২০১৯ সালে সেই বিমানহানার পরে লোকসভা ভোটে মোদীর জয়ে তা প্রভাব ফেলেছিল মত অনেক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞের।
৫ বছরে একের পর এক বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে দক্ষতার সঙ্গে তা সফল ভাবে পালন করায় ২০১৯ সালে অজিতকে তাঁর পদে পুনর্বহাল করেন মোদী। এমনকি বাড়ানো হয় তাঁর পদমর্যাদা। মোদী সরকারের প্রথম দফায় অজিতের পদমর্যাদা ছিল একজন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর সমান। কিন্তু ২০১৯ সালে পুনর্নিয়োগের সময় তা বাড়িয়ে একজন পূর্ণমন্ত্রীর পদমর্যাদা দেওয়া হয় অজিতকে।
মোদীর দ্বিতীয় ইনিংসের মতোই অজিত তাঁর দ্বিতীয় ইনিংসে জমিয়ে ব্যাট করেন। কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপের পরে আইনশৃঙ্খলা ফেরানোয় বড় দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁর কাঁধে।
২০২০ সালে জুন মাসে পূর্ব লাদাখে গালওয়ান উপত্যকায় লাল ফৌজের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে ভারতীয় সেনা। গোলাগুলি হয়ে ওঠে নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। কিন্তু সেখানেও বেজিংয়ের সঙ্গে আলচোনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কেরর সঙ্গেই বড় ভূমিকা পালন করেন অজিতও। যদিও সেই সময়ে জয়শঙ্কেরর সঙ্গে মত বিরোধ হয় প্রাক্তন গোয়ান্দা কর্তার। তাই তৃতীয় ইনিংসের সূচনা হবে কি না তা নিয়ে খানিক সংশয় ছিল। তবে এখন সে সব অতীত। নিজের যোগ্যতার জোরে ফের জাতীয় নিরাপত্তার দায়িত্বে পুনর্বহাল হয়েছেন অজিত। এখন তৃতীয় ইনিংস কেমন হয় ৭৭ বছরের অজিতের, সেটাই দেখার।