আবগারি দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। ৯ বার সমন এড়ালেও শেষ রক্ষা হলনা। আলাদত মুখ ফেরাতেই, কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করল ইডি। জেল থেকেই সরকার সামলাবেন কেজরিওয়াল, জানিয়েছে আপ। এদিকে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল আপের মিছিল-বিক্ষোভে থেকে উত্তাল দিল্লি। আটক একাধিক আপ নেতা-কর্মী।
দিল্লির আবগারি মামলায় আপ প্রধানকে মোট ন’বার সমন পাঠিয়েছিল ইডি। কিন্তু আট বারই হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। শেষ পাঠানো সমনে বৃহস্পতিবারই ইডি দফতরে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর। কিন্তু হাজিরা না দিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন কেজরিওয়াল। দিল্লি হাইকোর্ট কেজরিওয়ালের রক্ষাকবচের আবেদন খারিজ করে দেয়। এরপরই বৃহস্পতিবার রাতে ইডির ১২ জনের একটি দল কেজরিওযালের বাসভবনে যায়। এদিকে সন্ধ্যায় ফের সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন আপ প্রধান, কিন্তু বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট তাঁর আবেদন শোনেনি। এদিকে শুক্রবার সেই আবেদন প্রত্যাহার করা হয়। কেজরিওয়ালের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি সুপ্রিম কোর্টে জানান, গ্রেফতারির বিরুদ্ধে কেজরিওয়াল নিম্ন আদালতেই সওয়াল করবেন।
এই প্রথম দুর্নীতির অভিযোগে কোনও পদে থাকা মুখ্যমন্ত্রী গ্রেফতার হলেন। কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির পরই আপ সরকার ও দলের নেতৃত্ব নিয়ে তৈরি হয়েছে সঙ্কট। কীভাবে সরকার চলবে? তা নিয়ে জোর জল্পনা। এদিকে, গ্রেফতারির পরও মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়েননি কেজরিওয়াল। জেল থেকেই সরকার চালাবেন তিনি, এমনটাই জানিয়েছে আম আদমি পার্টি। শেষ পর্যন্ত যদি পদ ছাড়তে হয় কেজরিওয়ালকে, তবে কে হবেন দিল্লির পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী ? প্রশ্ন উঠছে দিল্লি জুড়ে।
আপ প্রধানের গ্রেফতারির পরই উত্তাল দিল্লি। দিকে দিকে বিক্ষোভ দেখান আপ নেতা- কর্মীরা। কেজরিওযালকে আদালতে পেশের পর মিছিল করে আপ। দিল্লির আইটিও-র কাছে বিক্ষোভ দেখানোর সময় আটক করা হয় দিল্লির মন্ত্রী তথা আপ নেত্রী অতিশী মারলেনাকে। তার পর আটক করা হয় পঞ্জাবের মন্ত্রী হরজ্যোত বাইনস, দিল্লির আর এক মন্ত্রী ইমরান হুসেনকে।
এদিকে কেজরিওয়ালের গ্রেফতারির পর প্রতিবাদের ঢেউ আছড়ে পড়ে পঞ্জাবেও। চণ্ডীগড় ও মোহালিতে তুমুল বিক্ষোভ দেখায় আপ। পুলিশ বাধা দিলে বেধে যায় ধুন্ধুমার। ব্যারিকেড ভেঙে এগোনোর চেষ্টা করেন আপ-কর্মীরা। পুলিশের সঙ্গে তুমুল ধস্তাধস্তি বেধে যায়।
লোকসভার আবহে মুখ্যমন্ত্রীর গ্রেফতারিতে উত্তাল রাজধানীর রাজনীতি। আবগারি মামলায় বিআরএস নেত্রী কে কবিতাকে দিন কয়েক আগেই গ্রেফতার করেছে ইডি। বর্তমানে আদালতের নির্দেশে ইডি হেফাজতে রয়েছেন তিনি। কবিতা ছাড়াও এই মামলায় এখনও পর্যন্ত আপের দুই প্রবীণ নেতা সিসৌদিয়া এবং আপের রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিংহ গ্রেফতার হয়েছেন।