বাগুইআটি ট্রলিকাণ্ডে প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য, স্বামী-সন্তানকে ছেড়ে প্রেমিকের সঙ্গে পালানোই হল কাল!

21

কলকাতা, ২৫ এপ্রিল: বাগুইআটি ট্রলি-কাণ্ডে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেছে, স্বামী ও সন্তানকে ছেড়ে প্রেমিকের সঙ্গে বারাসতে থাকতে শুরু করেছিলেন মৃত তরুণী। শুরুতে সব স্বাভাবিক থাকলেও পরে সম্পর্কের মধ্যে ফাটল ধরে। অভিযোগ, অশান্তি ও মারধরের জেরে প্রেমিকার হাতেই খুন হন ওই তরুণী। এরপর প্রমাণ লোপাটে দেহটি ট্রলিতে ভরে ফেলে আসে অভিযুক্ত প্রেমিক। তবে এত কিছু করেও শেষরক্ষা হল না—অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ল প্রেমিক।

ঘটনার সূচনা হয় গত মঙ্গলবার। সেদিন বাগুইআটির দেশবন্ধুনগরে একটি জঞ্জালভরা পরিত্যক্ত এলাকায় কালো রঙের ট্রলিব্যাগ পড়ে থাকতে দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। এরপরই খবর দেওয়া হয় পুলিশে। বাগুইআটি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ট্রলি খুলতেই চমকে ওঠে—ভিতরে ছিল এক যুবতীর নিথর দেহ। মুখ ঢেকে দেওয়া ছিল বাদামি রঙের সেলোটেপে। সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় তদন্ত।

তিনদিনের মধ্যে রহস্যের জট খুলে যায়। মৃতার পরিচয় মেলে—তিনি রিয়া ধর, মুর্শিদাবাদের নবগ্রামের বাসিন্দা। স্বামী ও সন্তানের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই চলছিল তাঁর সংসার। কিন্তু পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয় হয় বারাসতের বাসিন্দা কৌশিকের সঙ্গে। পরিচয় থেকে গড়ায় প্রেমে, এবং ক্রমে শুরু হয় একটি নিষিদ্ধ সম্পর্কের অধ্যায়।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, একসময় স্বামী-সন্তানকে ছেড়ে প্রেমিক কৌশিকের কাছে চলে আসেন রিয়া। বারাসতের একটি আবাসনে একসঙ্গে থাকতে শুরু করেন তাঁরা। তবে খুব দ্রুতই সম্পর্কে দেখা দেয় টানাপোড়েন। অভিযোগ, একদিন বচসার সময় রিয়াকে মারধরের পর শ্বাসরোধ করে খুন করে কৌশিক। এরপর প্রমাণ লোপাটে তাঁর দেহ ট্রলিতে ভরে ফেলে দেয়।

কিন্তু আশপাশে দেহ ফেলে রাখলে ধরা পড়ার আশঙ্কা থাকায়, কৌশিক অ্যাপ ক্যাব করে ট্রলি নিয়ে বারাসত থেকে পৌঁছায় বাগুইআটিতে। সেখান থেকে হাঁটতে হাঁটতে গিয়ে দেশবন্ধুনগরের ধানখেত সংলগ্ন একটি সরু নর্দমায় ফেলে দেয় ট্রলিব্যাগটি।

এদিকে স্ত্রী নিখোঁজ হওয়ায় মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন রিয়ার স্বামী। ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ, এবং ট্রলিকাণ্ডের সূত্র ধরে ক্যাবচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বেরিয়ে আসে কৌশিকের নাম। পরে তাঁকে জেরা করতেই পুরো ঘটনা সামনে আসে বলে দাবি তদন্তকারীদের। ঘটনার নেপথ্যে অন্য কোনো কারণ আছে কিনা, বা আরও কেউ এতে জড়িত কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Comments are closed.