পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ড, ঘটনাস্থলে অমিত শাহ, কথা বললেন নিহতদের পরিবারের সঙ্গে

13

ডিজিটাল ডেস্ক, ২৩ এপ্রিল: মঙ্গলবার দুপুরে জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন পর্যটক। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের তিনজন বাসিন্দা। এই হামলায় বহু মানুষ আহত হয়েছেন। ঘটনার পর রাতেই হামলার দায় স্বীকার করে পাকিস্তান ঘনিষ্ঠ জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈবা ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)।

পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘটনাস্থলে পৌঁছান। বুধবার সকালে তিনি নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং শোকাহত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। দ্রুত তদন্ত ও সুরক্ষা ব্যবস্থার মূল্যায়নের লক্ষ্যে উপত্যকায় পৌঁছেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র একটি বিশেষ দল।

এর আগে মঙ্গলবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভয়াবহ এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার সঙ্গে বৈঠক করেন।

মঙ্গলবার দুপুরে দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার বৈসরন উপত্যকায় পাক জঙ্গিগোষ্ঠী লশকর-ই-ত্যায়বার ছায়া সংগঠন টিআরএফ-এর সন্ত্রাসবাদীদের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন পর্যটক। রাতেই এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় জঙ্গিগোষ্ঠীটি।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার সকালে এক আইজির নেতৃত্বে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র গোয়েন্দা দল পৌঁছায় উপত্যকায়। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, তাঁরা হামলার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চালাবেন এবং স্থানীয় পুলিশকে প্রয়োজনীয় সহায়তা করবেন।

উল্লেখ্য, টিআরএফ এর আগেও এই ধরনের হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল। গত বছরের জুন মাসে জম্মু-কাশ্মীরের রেইসি জেলায় পুণ্যার্থীদের একটি বাসে হামলা চালিয়েছিল তারা, যেখানে প্রাণ হারিয়েছিলেন অন্তত ১০ জন পুণ্যার্থী।

২০১৯ সালে, জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের পর জন্ম নেয় ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)। কাশ্মীরি জঙ্গি শেখ সাজ্জাদ গুলের নেতৃত্বে গঠিত এই সংগঠনটি, লশকর-ই-ত্যায়বার ছায়া গোষ্ঠী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে সেই সময়ের রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে। উপত্যকায় নিজের উপস্থিতি জানান দিতে লশকর, জৈশ-ই-মহম্মদ-সহ একাধিক জঙ্গিগোষ্ঠী থেকে সদস্য আনা হয় এই সংগঠনে।

টিআরএফ-এর মূল উদ্দেশ্য ছিল কাশ্মীরের শান্তি ও স্থিতাবস্থা নষ্ট করা এবং ভারতের সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নের মুখে ফেলা। সেই লক্ষ্য পূরণে তারা নিজেদের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে রূপান্তর আনে এবং বিশেষভাবে নিশানা করতে শুরু করে পরিযায়ী শ্রমিক ও কাশ্মীরি পণ্ডিতদের।

নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, টিআরএফ-এর দ্রুত বিস্তার ও সক্রিয়তার পেছনে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের প্রত্যক্ষ মদত ছিল। এই সংগঠনের ক্রমবর্ধমান হুমকি মাথায় রেখে ২০২৩ সালে ভারত সরকার টিআরএফ-কে ‘সন্ত্রাসবাদী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করে এবং তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

Comments are closed.