পহেলগাঁও হামলায় ‘ক্ষমা চাইলেন লজ্জিত ওমর, রাজ্যের স্বীকৃতি চাইবেন কোন মুখে?

12

ডিজিটাল ডেস্ক, ২৮ এপ্রিল: পর্যটকদের নিরাপত্তা রক্ষা করতে না পারার দায় নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে ক্ষমা চাইলেন জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার নিন্দায় সোমবার কাশ্মীর বিধানসভায় ডাকা বিশেষ অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, গোটা ঘটনায় তিনি গভীরভাবে মর্মাহত। তবে তিনি স্পষ্ট করেন, এই হামলাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার করে কখনও কাশ্মীরের পূর্ণরাজ্যের মর্যাদার দাবি তুলবেন না।

ওমর বলেন, “পহেলগাঁও হামলার প্রভাব গোটা দেশজুড়ে পড়েছে। গত ২১ বছরে এমন ভয়াবহ হামলার সাক্ষী হয়নি বৈসরন উপত্যকা। নিহতদের পরিবারকে কীভাবে সান্ত্বনা দেব, আমি জানি না।” নিজেকে কাশ্মীরের ‘গৃহকর্তা’ হিসেবে অভিহিত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পর্যটকদের নিরাপদে বাড়ি ফেরানো আমার দায়িত্ব ছিল। সেই দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছি। ক্ষমা চাওয়ার মতো ভাষাও খুঁজে পাচ্ছি না।”

পহেলগাঁও হামলার পর অনেকেই ওমর আবদুল্লার নেতৃত্বাধীন সরকারের দিকে প্রশ্নের আঙুল তুলেছেন। তাঁদের মতে, দীর্ঘ এক দশক পর কাশ্মীরে নির্বাচন হয়েছে এবং ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় এসেছে—আর ঠিক তার পরেই জঙ্গি হামলায় রক্তাক্ত হয়েছে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটি। যদিও বাস্তবে কাশ্মীর সরকারের হাতে সেনা বা পুলিশের উপর সরাসরি নিয়ন্ত্রণ নেই, তবুও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিজের দায় স্বীকার করে ব্যর্থতা মেনে নিয়েছেন ওমর আবদুল্লা।

তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, পহেলগাঁও হামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে কাশ্মীরের অঙ্গরাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তিনি করবেন না। সোমবার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে ওমর আবদুল্লা বলেন, “এই ভয়াবহ হামলার পর আমি কীভাবে মুখ তুলে কেন্দ্রের কাছে গিয়ে বলব, আমাদের পূর্ণরাজ্যের মর্যাদা ফেরাও? আমরা আগে এই দাবি করেছি, ভবিষ্যতেও করব। কিন্তু এখন যদি বলি—২৬ জন মানুষের প্রাণ গেল, তাই আমাদের রাজ্যের স্বীকৃতি দাও—তা হলে সেটি হবে অত্যন্ত লজ্জাজনক। আমার রাজনীতি এতটা সস্তা নয়।”

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপের পর থেকেই কাশ্মীর ফের অঙ্গরাজ্যের মর্যাদা পাওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। যদিও ২০২৪ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও এখনও পর্যন্ত সেই মর্যাদা ফেরেনি ভূস্বর্গ কাশ্মীরের।

Comments are closed.