ডিজিটাল ডেস্ক, ২৮ এপ্রিল: পহেলগাঁও হামলার পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের দাবিকে প্রকাশ্যে সমর্থন জানাল চিন। রবিবার ইসলামাবাদে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশাক দারের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। সেই আলোচনার পর পহেলগাঁও হামলা এবং কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেন তিনি। জঙ্গি হামলার ঘটনায় পাকিস্তান যে নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি তুলেছে, তাতে সমর্থন জানিয়েছে চিন। ওয়াং ই জানান, পাকিস্তান সরকারের সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী অবস্থানকে তারা সম্মান ও সমর্থন করে। পাশাপাশি, তিনি বলেন, চিন অতীতে যেমন পাকিস্তানের পাশে ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। বেজিং-এর তরফে ভারত ও পাকিস্তান— উভয় দেশকেই সংযম বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গি হামলায় নিহত ২৬ জনের মধ্যে ২৫ জনই ছিলেন পর্যটক। এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত সরকার। সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করা, পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল সহ নানা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। তবে এই পদক্ষেপগুলোকে ভালোভাবে নেয়নি ইসলামাবাদ। শুরু থেকেই পহেলগাঁও হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে তারা। পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পাকিস্তান শুরু থেকেই পহেলগাঁও হামলার ঘটনায় নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়ে আসছে। এ বিষয়ে তারা রাশিয়া, চিন ও পশ্চিমা দেশগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টাও করেছে। ইসলামাবাদের অভিযোগ, ভারতের গোয়েন্দা ব্যর্থতা ঢাকতেই এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণ করতে এই হামলার দায় তাদের উপর চাপানো হচ্ছে। চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস পাকিস্তানের এই দাবিকে সমর্থন করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-কে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্ক এবং বর্তমান পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে বেজিং। তাঁর মতে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সব দেশকেই ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানো উচিত। পাশাপাশি তিনি সতর্ক করেন, ভারত-পাকিস্তান বিরোধ কাশ্মীর ও সংলগ্ন অঞ্চলের শান্তি বিনষ্ট করছে এবং এই পরিস্থিতি উভয় দেশের জন্যই ক্ষতিকর। তাই সমস্যা সমাধানে সংযম বজায় রেখে আলোচনাই একমাত্র পথ বলে মনে করেন তিনি।
পহেলগাঁও হামলার পর আমেরিকা-সহ পশ্চিমা দেশগুলো ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তখন বলেছিলেন, সন্ত্রাসবাদ দমনে ভারতকে তিনি পূর্ণ সমর্থন দেবেন। এখন, চিনও সন্ত্রাসবাদবিরোধী শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে, এবং পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের দ্বন্দ্বের পটভূমিতে শান্তির জন্য তাদের সহনশীলতা ও আলোচনার পক্ষে মত প্রকাশ করেছে।
Comments are closed.