ডিজিটাল ডেস্ক, ২১ এপ্রিল: আজ, সোমবার শালবনিতে জিন্দাল গোষ্ঠীর তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের শিলান্যাস করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিট গড়তে সজ্জন জিন্দলের সংস্থা জেএসডব্লিউ এনার্জি প্রায় ১৬,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এবং জিন্দাল গোষ্ঠীর শীর্ষকর্তারাও।
জানা গেছে, শিলান্যাসের ৪২ মাসের মধ্যে প্রথম ইউনিট এবং ৪৮ মাসের মধ্যে দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। এই প্রকল্পকে ঘিরে একদিকে যেমন নতুন কর্মসংস্থানের আশ্বাস, তেমনই মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠে বিরোধীদের উদ্দেশে কটাক্ষের সুরও শোনা গেল।
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা বাংলার জন্য এক ঐতিহাসিক প্রকল্প। এর আগে এমন প্রকল্প রাজ্যে কখনও হয়নি। আগে লোকে বলত, এটা লোডশেডিংয়ের সরকার। এখন আর সে দরকার নেই। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে আগামী ১০০ বছর রাজ্যে বিদ্যুৎ নিয়ে কোনও সমস্যা থাকবে না।’’
পরদিন, ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার, মুখ্যমন্ত্রী মেদিনীপুর কলেজ মাঠে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। সেখানে তিনি গোয়ালতোড়ের একটি সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট-সহ একাধিক নতুন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন।
মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি, জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার এবং সাংসদ জুন মালিয়া। শালবনিতে নামার পর প্রথমেই মুখ্যমন্ত্রী যান জিন্দাল গোষ্ঠীর কারখানায়।
সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘যাঁরা বলে কিছুই হচ্ছে না, তাঁদের বলব—এখানে এসে চোখে দেখে যান। সৌরভ আর জুন ঠিকই বলেছে, পূর্ব ভারতে এত বড় প্রকল্প আগে কখনও হয়নি। সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ এই প্রকল্প থেকে কাজ পাবেন। আরও বেশ কিছু বিদ্যুৎ প্রকল্পও হচ্ছে। এটা বাংলার জন্য এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।’’
তিনি আরও জানান, শালবনির এই তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে রাজ্যের ২৩টি জেলা উপকৃত হবে। ১৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে এবং এই প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬০০ কোটি টাকা। সঙ্গে যোগ করেন, “আগামীকাল গোয়ালতোড়ে সোলার প্ল্যান্টেরও উদ্বোধন করব।”
সোমবার শালবনিতে শিল্প সূচনার মঞ্চ থেকেও সেই বার্তা আরও একবার তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের দেশ বৈচিত্র্যে ভরপুর—প্রতিটি রাজ্যের রয়েছে নিজস্ব সৌন্দর্য, খাবারদাবার, উৎসবের ধরন। এই ভিন্নতার মধ্যেই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি—ঐক্য। সেটাকে কখনও ভাঙা উচিত নয়, বরং আরও ঐক্যবদ্ধ হওয়াই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।”
তিনি আরও বলেন, “সবাই যেন কর্মমুখর থাকেন, সেটাই সবচেয়ে জরুরি। মনে রাখতে হবে, ইতিবাচক মানসিকতা থেকেই মনের জোর আসে। পজিটিভ কথা শুনলে মন চাঙ্গা হয়, আর নেতিবাচকতা মানুষের মধ্যে গভীর প্রভাব ফেলে।”
Comments are closed.