ডিজিটাল ডেস্ক, ২০ এপ্রিল: মুর্শিদাবাদের অশান্তি ঘিরে বাবা-ছেলে খুনের ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার রাতে চোপড়া এলাকা থেকে ধরা হয় অন্যতম মূলচক্রী জিয়াউল শেখকে। ধৃত জিয়াউল সামশেরগঞ্জ থানা এলাকার বাসিন্দা। এই নিয়ে এই হত্যাকাণ্ডে ধৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল চার। এর আগে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ধৃত জিয়াউল শেখ সামশেরগঞ্জের সুলিতলা এলাকার বাসিন্দা। ঘটনার পর থেকেই সে এলাকা ছেড়ে গা-ঢাকা দিয়েছিল। আগে গ্রেফতার হওয়া তিন অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জিয়াউলের নাম জানতে পারে পুলিশ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া থেকে তাকে গ্রেফতার করে বিশেষ তদন্তকারী দলের আধিকারিকরা। শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে ধরা হয় তাকে। রবিবার জিয়াউলকে জঙ্গিপুরে আনা হচ্ছে এবং আদালতে পেশ করে পুলিশ তাকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে।
ওয়াকফ সংশোধনী আইন প্রত্যাহারের দাবিতে মুর্শিদাবাদে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝেই জাফরাবাদে এক দল দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে বাড়ি থেকে টেনে নিয়ে হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসকে খুনের অভিযোগ ওঠে। ঘটনার গুরুত্ব বুঝে রাজ্য সরকার তদন্তে সিট গঠন করে। প্রাথমিক তদন্তে সুতি ও বীরভূমের মুরারই এলাকা থেকে কালু নাদাব ও দিলদার নাদাবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সুতি এলাকা থেকেই ইনজামুল নামে আরও এক দুষ্কৃতীকে আটক করা হয়। আদালত তিন অভিযুক্তকে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। এরমধ্যেই ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেফতার করেছে সিট।
এর আগে ইনজামাম হক নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি এই ইনজামামের বিরুদ্ধে দাবি, পিতা-পুত্রের প্রতি তার ব্যক্তিগত আক্রোশ ছিল। তদন্তে উঠে এসেছে, নিহতদের বাড়ির সামনের একটি বৈদ্যুতিক খুঁটিতে কাজ করা নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়েছিল। তবে এটি নিছক ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব, না কি এর পেছনে অন্য কোনও বড়সড় কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
অন্যদিকে, দাস পরিবারের বাবা-ছেলে খুনের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারটিকে ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন। তবে দাস পরিবারের সদস্যরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা সেই টাকা নেবেন না।
গত ১৬ এপ্রিল হরগোবিন্দ ও চন্দন দাসের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু পরিবারটির অভিযোগ, অশান্তি ও আতঙ্কের কারণে শ্রাদ্ধে পুরোহিত বা ক্ষৌরকার কেউ আসেননি। শেষমেশ পুরোহিত ছাড়াই সম্পন্ন করতে হয় শ্রাদ্ধের কাজ।
Comments are closed.