চাকরি বাতিলের প্রতিবাদে সরব শিক্ষকরা, আইনি পরামর্শের জন্য আইনজীবীদের আহ্বান

15

কলকাতা: সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারানো শিক্ষকদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। এই পরিস্থিতিতে, চাকরি হারানো শিক্ষকরা আইনি পরামর্শ চেয়েছেন এবং তারা আইনজীবীদের সাথে দেখা করবেন।

সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের সরকার পোষিত এবং ভারপ্রাপ্ত স্কুলের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল করেছে। এই রায়ের ফলে শিক্ষকরা চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন। কিভাবে তারা তাদের পুরনো পদ ফিরে পাবেন, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।

চাকরি হারানো শিক্ষকদের একটা বড় অংশ কলকাতার ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে [Dharmatala] অবস্থান বিক্ষোভ করছেন। তারা সেখানে আইনজীবী ও প্রাক্তন বিচারপতিদের আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে তারা আইনি পরামর্শ দিতে পারেন। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, তারা আইনি পথে নিজেদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে চান।

শিক্ষকরা জানিয়েছেন, তারা আইনজীবীদের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন। ওয়াই চ্যানেলে একটি বাক্স রাখা হয়েছে, যেখানে যে কেউ তাদের পরামর্শ লিখে জানাতে পারেন। সেই পরামর্শগুলোও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

চাকরিহারা শিক্ষকদের সংগঠন ‘যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী ২০১৬ ঐক্যমঞ্চ’ আগামী দিনে একাধিক কর্মসূচির ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

  • পয়লা বৈশাখের দিনে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে আলোচনাসভা।
  • দিল্লির যন্তরমন্তরে ধর্না [Delhi Jantar Mantar Protest]।
  • বৃহস্পতিবার কালো ব্যাজ পরে কাজে যোগ দেওয়া।
  • আগামী ২২ এপ্রিল রাজভবন অভিযান [Raj Bhavan March]।
  • ১ থেকে ৭ মে পর্যন্ত রিলে অনশন এবং পরবর্তীতে আমরণ অনশনের ডাক।

চাকরিহারাদের অন্য একটি অংশ এসএসসি (স্কুল সার্ভিস কমিশন) [School Service Commission] ভবনের সামনে অনশন করছেন। তারা নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে [CBI Investigation] ওএমআর শিট প্রকাশের জন্য মেল করার পরিকল্পনা নিয়েছেন।

সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের এসএসসিতে নিয়োগের পুরো প্যানেল বাতিল করেছে। আদালত জানিয়েছে, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কারচুপি করা হয়েছে এবং এর কোনো বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। আদালত তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে।

সল্টলেকে অবস্থান বিক্ষোভ করা কয়েকজন চাকরিপ্রার্থীর মধ্যে তিন জন অনশনে বসেছিলেন। তাদের মধ্যে একজন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে বাকি দুইজন অনশন প্রত্যাহার করেন।

এই মুহূর্তে, চাকরি হারানো শিক্ষকরা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগে রয়েছেন। তারা একদিকে যেমন আইনি পথে নিজেদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন, তেমনই অন্যদিকে তারা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তারা আশা করছেন, খুব শীঘ্রই এর একটা সমাধান সূত্র পাওয়া যাবে। সরকার এবং আদালতের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে আছেন শিক্ষক ও তাদের পরিবার। এই পরিস্থিতিতে, বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন একসাথে হয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটতে চাইছে। একই সাথে, তারা আইনি লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং অভিজ্ঞ আইনজীবীদের পরামর্শ নিচ্ছে।

Comments are closed.