Tripura : ভয়াবহ বন্যার কবলে ত্রিপুরা রাজ্য। গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে জলস্ফীতি দেখা দিয়েছে রাজ্যের প্রতিটি নদীতে। ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যার জন্য রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দু’দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে ত্রিপুরা সরকার।
গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে ত্রিপুরার প্রতিটি নদীতে জলস্ফীতি দেখা দেয়। ফলে প্লাবিত হয়েছে সমতল এলাকা। আগরতলা শহরের অধিকাংশ এলাকা জলের তলায়। অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের জন্য আচমকা বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় রাজ্যটিতে। উত্তর ত্রিপুরা জেলার কদমতলায় পাহাড় থেকে নেমে আসা জলে ভেসে যায় বিস্তীর্ণ এলাকা। কদমতলার সরলা এলাকায় সব ফসলের মাঠ ভেসে গেছে বন্যার জলে। চোখের সামনেই মুহূর্তে প্লাবিত হয় ১৫ থেকে ২০টি গ্রাম।
তেলিয়ামুড়া মহকুমায় বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে নদীর জল। গোটা মহকুমা জুড়ে সতর্কতা প্রশাসনের। খোয়াই নদীর জলস্ফীতিতে ইতিমধ্যে তেলিয়ামুড়ার বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। রাজপথে কোথাও হাঁটু জল, কোথাও কোমর জল। বন্যাক্রান্তদের উদ্ধারে নেমেছে NDRF ও SDRF.
গত তিনদিনের ভারী বর্ষণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি উদয়পুরে। গোমতী নদীতে জলস্ফীতি দেখা দেওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বেশ কয়েক হাজার মানুষ। স্থানীয় রমেশচন্দ্র হাইস্কুলে খোলা হয়েছে একটি ত্রাণ শিবির।
রাজধানী আগরতলায় মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনের রাজপথে কোমর জল। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি, আদালত চত্বর, পশ্চিম জেলার জেলাশাসকের কার্যালয় সর্বত্র এখন জলে টুইটুম্বুর। নৌকায় চেপে বাড়ি থেকে বের হতে হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীকে। রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ত্রিপুরায় এরকম বৃষ্টিপাত এর আগে কখনও হয়নি। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। রাজ্যে শীঘ্রই আসছে NDRF-এর অতিরিক্ত বাহিনী।
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা জানান, ভারী বর্ষণ ও বন্যায় রাজ্যে এ পর্যন্ত ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। দু’জন সন্ধানহীন রয়েছেন। দক্ষিণ ত্রিপুরায় ৫ জনের মৃত্যু। খোয়াই ও গোমতী জেলায় ২ জনের মৃত্যু।
ত্রিপুরায় ইতিমধ্যে ১৮৩টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ৬০০০ মানুষ। বন্যাক্রান্তদের উদ্ধারে নেমেছে ২০০টি দল।
রাজ্যের সর্বশেষ বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে রাজস্ব বিভাগের সচিব ব্রিজেশ পান্ডে জানান, রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে মহাকরণে চলছে ঘন ঘন বৈঠক। ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে জোর দেওয়া হয়েছে। তবে এখনও ত্রিপুরার সর্বত্র ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে বলে জানিয়েছেন।