এ যেন ভোটের আগের প্রচার। প্রতিশ্রুতিই সার। একটু বৃষ্টির জন্য অধীর আগ্রহে বসে রয়েছে দক্ষিণবঙ্গবাসী। অথচ লাগাতার বর্ষণ, ভূমি ধস আর তিস্তার চোখ রাঙানিতে কার্যত বিধ্বস্ত সিকিম এবং লাগোয়া উত্তরবঙ্গ। জলের তলায় একাধিক এলাকা। বাড়ি ছেড়ে ব্যারেজের উপর গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে সাধারণ মানুষ। টানা বৃষ্টিতে আতঙ্কে সাধারণ মানুষ। তিস্তার জল আরও বাড়লে পরিস্থিতি কী হবে তা নিয়ে চিন্তিত প্রশাসন। সিকিমে আটকে রয়েছে বহু পর্যটক, উদ্ধারকার্যে নেমেছে সেনাবাহিনী। রবিবার উত্তরের তিন জেলায় লাল সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। পাহারঘেঁষা বাকি জেলাতেও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
হাওয়া অফিস সূত্রে খবর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী বর্ষণ জারি থাকবে। স্বভাবতই আরও চিন্তিত প্রশাসন থেকে তিস্তা পাড়ের বাসিন্দারা। বৃষ্টি হতে পারে ৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার বা তার বেশিও। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারে রবি ও সোম দু’দিন লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ভারী বৃষ্টির হবে দার্জিলিং এবং কালিম্পঙেও। দুই দিনাজপুর, এবং মালদহে বজ্র-বিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি এবং ঝড়ো হাওয়া বইতে পারে সোমবার অবধি।
তবে উত্তরের এই চরম দুর্যোগে গরমে জ্বালাপোড়া অবস্থা দক্ষিণবঙ্গে। বিক্ষিপ্ত ভাবে কোথাও কোথাও মাঝে ঝড় বৃষ্টি হলেও স্বস্তি মেলেনি। শুকনো খটখটে কলকাতাও। এমতাবস্থায় সবার একটাই প্রশ্ন বর্ষা ঢুকবে কবে? আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছিল রবিবার থেকে দক্ষিণবঙ্গেও শুরু হতে পারে প্রাক বর্ষার বৃষ্টি। কিন্তু রবিবার সকালে হাওয়া অফিস সূত্রে শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, পূর্ব এবং পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ এবং দুই ২৪ পরগনা জেলায় ঝড়বৃষ্টি হতে পারে রবি এবং সোমবার। বৃষ্টি হলেও বজায় থাকবে প্যাঁচপ্যাচে গরম। আর মঙ্গলবারের আগে শহর কলকাতায় কোনও বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।
তে আবহাওয়া অফিসের পুর্বাভাস অনুযায়ী মঙ্গলবার থেকে দক্ষিণের সব জেলাতেই বৃষ্টি শুরু হবে। সেই সঙ্গে বইতে পারে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত ঝোড়ো হাওয়া। কোথাও কোথাও হাওয়ার বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্তও। এবং চলতি সপ্তাহেই দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা প্রবেশ করতে পারে বলে অনুমান হাওয়া অফিসের।
রবিবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৯.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে দুই ডিগ্রি বেশি। শনিবার শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তা-ও স্বাভাবিকের চেয়ে দুই ডিগ্রি বেশি।