কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি হারা ২৫৭৫৩ জনের মধ্যে আছেন অনেক যোগ্য শিক্ষকও। চাকরি হারিয়ে উদ্বেগের প্রহর গুনছেন সকলেই। যাঁরা নিজেদের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছিলেন তাঁদের পাল্টা প্রশ্ন, অযোগ্যদের সঙ্গে তাঁদের কেন একই পঙক্তিতে বসানো হল। সোমবার শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক। কিন্তু চাকরি হারাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাঁরা যোগ্য। অন্যের ভুলের বোঝা কেন তাঁরা বইবেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন চাকরিহারা যোগ্য প্রার্থীরা। নিজেদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ঠিক করতে কোচবিহার রাজবাড়ি স্টেডিয়ামে জড়ো হন চাকরিহারা প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষক।
আদালতের নির্দেশে উত্তর দিনাজপুর জেলায় প্রায় ৪৫০ জন চাকুরি খুইয়েছেন। অনেকেই অন্য চাকরি ছেড়ে শিক্ষকতায় এসেছিলেন। চাকরি সূত্রেই তাঁরা নিজেদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও করেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে চাকরি হারিয়ে তাঁরা অকুল পাথারে পড়েছেন। আদালতের রায়ে অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়ছে যোগ্যরা। অযোগ্যদের বাছাই করে ছাঁটাই করুক আদালত। নিজেদের এই দাবি আদায়ে মঙ্গলবার শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্ক ময়দানে জমায়েত হয়ে আন্দোলনে নামলেন চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকরা।
নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির কথা মানলেন চাকরিহারা শিক্ষক ব্রজেশ সরকার। তাঁর অভিযোগ, তাঁর মতো আরও অনেক যোগ্য শিক্ষকও দুর্নীতির শিকার হলেন। চাকরি বিক্রির অভিযোগে জেলে রয়েছেন বাগদার চন্দন মণ্ডল। অভিযোগ, চন্দনের মাধ্যমে বাগদার বিভিন্ন এলাকায় অর্থের বিনিময়ে অনেকেই চাকরি পেয়েছেন। চাকরিহারাদের মধ্যে বাগদার অনেকেই রয়েছেন। এভাবে হঠাৎ করে অনেকের চাকরি যাওয়ায় বাগদায় তৈরি হয়েছে চাপা উত্তেজনা। কে যোগ্য আর কে অযোগ্য তা খুঁজে বের করা খড়ের গাদায় সূচ খোঁজার মতো এক কঠিন কাজ। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাও যোগ্য ও অযোগ্যদের আলাদা করে চিহ্নিত করতে পারেনি। তাই আদালতের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে ২৫৭৫৩ জন শিক্ষকের। যোগ্য প্রার্থীরা তাই প্রশ্ন তুলেছেন, অন্যের ভুল বা অন্যায়ের বোঝা কেন তাঁরা বইবেন।