টাইম ম্যাগাজিনের বিশ্বের ১০০ জন প্রভাবশালী ব্যাক্তির তালিকায় নাম ৮ ভারতীয়ের। অলিম্পিয়ান কুস্তিগীর সাক্ষী মালিক, ভারতীয় বংশোদ্ভূত অভিনেতা দেব প্যাটেল, অভিনেত্রী আলিয়া ভট্ট, মাইক্রোসফ্ট সিইও সত্য নাদেলা, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা, ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এনার্জি এর লোন প্রোগ্রাম অফিসের কর্ণধার জিগর শাহ, ভারতীয় বংশোদ্ভূত রেস্তোরাঁর তথা প্রখ্যাত শেফ এবং লেখক আসমা খান, এবং ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক প্রিয়মবদা নটরাজন ভারতীয় হিসাবে এই ৮জন এই বছর বিশ্বের ১০০ প্রভাবশালী ব্যাক্তির তালিকায় স্থান পেয়েছেন। বুধবার এই তালিকা প্রকাশিত হয়েছে।
পরিচালক, প্রযোজক এবং লেখক টম হার্পার বলেন আলিয়া একটি ‘দুর্দান্ত প্রতিভা’। তাঁর কথায় ‘এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর কাজের জন্য প্রশংসিত বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অভিনেতাদের মধ্যে একজনই নয় – তিনি একজন ব্যবসায়ী এবং একজন সমাজসেবী যিনি সততার সাথে নেতৃত্ব দেন’। হার্পারের কথায়, ‘আলিয়ার সুপার পাওয়ার হল সত্যতা এবং সংবেদনশীলতার সঙ্গে তাঁর স্টারডমকে মিশিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা। একজন অভিনেতা হিসাবে তিনি উজ্জ্বল, ব্যক্তি হিসাবে তিনি মাটির মানুষ এবং তাঁর সৃজনশীলতা তাঁকে সত্যিকারের একজন আন্তর্জাতিক তারকা তৈরি করেছে’।
দেব প্যাটেল সম্পর্কে অস্কার-মনোনীত অভিনেতা ড্যানিয়েল কালুইয়া লেখেন, ‘দেব যখন পর্দায় আসে তার মানবতা ফুটে ওঠে, এমনকি চরিত্র খারাপ কিছু করলেও তাঁর উপস্থিতি আপনাকে বুঝিয়ে দেয় যে সে কোথা থেকে আসছে। ‘মাঙ্কি ম্যানে’ তার সর্বশেষ অভিনয় আমার খুব প্রিয়। মাঙ্কি ম্যান একজন অবিশ্বাস্য পরিচালক রূপে দেবের আত্মপ্রকাশ।
মাইক্রোসফটের সিইও নাদেলা সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে, টাইম বলেছে, ‘আমাদের ভবিষ্যত গঠনে নাদেলা গভীরভাবে প্রভাবশালী। মাইক্রোসফটের –এর ‘মিস্ট্রাল এআই’ এর সঙ্গে ‘ওপেনএআই’-এ বিনিয়োগ তাঁকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিপ্লবের অগ্রভাগে রাখে। নাদেলার কাছে এআই একটি হাতিয়ার, যা মানুষকে ক্ষমতায়ন করবে। সত্য
(সত্য নাদেলা) এআই এর স্টুয়ার্ডদের একজন।’
ভারতীয় কুস্তিগীর স্বাক্ষী মালিক সম্পর্কে অস্কার-মনোনীত ডকুমেন্টারি চলচিত্র নির্মাতা পাহুজার কথায় ‘স্বাক্ষী ভারতের সবচেয়ে বিখ্যাত কুস্তিগীর’, যে মহিলা ক্রীড়াবিদদের যৌন হয়রানির অভিযোগে অভিযুক্ত ভারতের রেসলিং ফেডারেশনের প্রধান ব্রিজ ভূষণ সিংহের অবিলম্বে গ্রেপ্তার এবং পদত্যাগের জন্য প্রতিবাদ করেন। তাঁর কথায়, ‘ব্রিজ ভূষণের বিরুদ্ধে সরকারি পদক্ষেপের দাবিতে শুরু একটি ছোট প্রতিবাদ থেকে এক বছরব্যাপী নজিরবিহীন যুদ্ধে পরিণত হয় স্বাক্ষীরদের লড়াই। যা সারা দেশ থেকে সমর্থন পায় এবং সমগ্র বিশ্বের মনোযোগ আকর্ষণ করে।’ তাঁর কথায় ‘এই লড়াই এখন আর কেবল ভারতীয় মহিলা কুস্তিগীরদের নয়, বরং সমগ্র ভারতের সব মেয়েদের যাদের এতদিন চুপ করে ছিল।’
অজয় বঙ্গ সম্পর্কে বলতে গিয়ে, মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেনের কথায়, ‘অজয় একটি বিশ্বব্যাপী সংস্থার নেতৃত্ব দেওয়ার পরে বিশ্বব্যাঙ্কে। তিনি লক্ষ লক্ষ ব্যাঙ্কবিহীন মানুষকে ডিজিটাল অর্থনীতিতে নিয়ে এসেছেন। দারিদ্র্যমুক্ত একটি বিশ্বের লক্ষ্যে অজয় এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করেছিলেন এবং তা বাস্তাবায়িত করার জন্য সাহসী পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা বোধ করেননি।’
আসমা খানকে “শীর্ষ শেফ” হিসাবে অভিহিত করে ভারতীয়-আমেরিকান লেখিকা এবং মডেল পদ্মা লক্ষ্মী বলেছেন, “আসমা কেবল সঠিক জিনিস করতেই আগ্রহী নয়, তিনি একজন বুদ্ধিমান ব্যবসায়ীও। দক্ষিণ এশিয়ার আন্টিরা রান্নাটা সবচেয়ে ভালো জানেন। পশ্চিমের অনেক ভারতীয় রেস্তোরাঁর মেনু আছে যেখানে সব কিছুরই স্বাদ একই রকম। কিন্তু আসমার খাবার অবাক করার মতো।‘ প্রিয়মবদা নটরাজন সম্পর্কে, আমেরিকান জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানী শেপ ডোলেম্যান বলেছেন ‘তিনি আমাদেরকে জ্যোতির্বিদ্যার একটি মৌলিক রহস্য বোঝার কাছাকাছি নিয়ে এসেছেন: বেশিরভাগ ছায়াপথের কেন্দ্রে লুকিয়ে থাকা সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলগুলি কী ভাবে তৈরি হয়? আমি সবসময় ওঁর কাজের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হই।