হাওড়া, গঙ্গার ওপারে কলকাতার যমজ শহর। একদিকে কলকাতা যেমন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রাণকেন্দ্র তেমনি হাওড়া শিল্প নগরী। বর্তমানে হাওড়ার শিল্প দুরবীন দিয়ে খুঁজতে হয়, একদা প্রাচ্যের শেফিল্ড এখন ধুঁকছে ক্ষয় রোগে। হারিয়েছে অতীতের জৌলুস।
লোকসভার আবহে হাওড়ার অলিগলি ঘুরে দেখল এনকেটিভি বাংলা। বার্ন স্ট্যান্ডার্ড, জে কে ডব্লিউ, হুগলি ডক, গ্যাসকিং সহ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ কারখাা ছিল হাওড়ায়। প্রণীত হয়েছিল বিশেষ আইন। সবই এখন ইতিহাস। বড় বড় কারখানার কঙ্কালের বুক চিড়ে বেরিয়ে আসা দীর্ঘশ্বাসে শুধুই হতাশা। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, বছর বছর ভোট দেওয়ার পরও তারা কী পেলেন? তাদের নির্বাচিত জন প্রতিনিধিরা হাওড়া শহরের উন্নতি করতে পারলেন না কেন? পর থেকেই হাওড়ায় পেণ্ডুলামের মত একবার ডানে তো একবার বামে ঝুঁকেছে।
১৯৫১-৫৭ কংগ্রেসের দখলে ছিল হাওড়া
১৯৫৭-৬৭ হাওড়া চলে যায় সিপিআইয়ের দখলে
১৯৬৭-৭১ ফের কংগ্রেস দখল করে হাওড়া
১৯৭১-৮৪ হাওড়া ফের জেতে সিপিএম
১৯৮৪-৮৯ হাওড়া ছিল কংগ্রেসের দখলে
১৯৮৯-৯৬ ফের হাওড়া দখল করে সিপিএম
১৯৯৬-৯৮ হাওড়া ছিল কংগ্রেসের দখলে
১৯৯৮-৯৯ হাওড়া চলে যায় তৃণমূলের দখলে
১৯৯৯-২০০৯ ১০ বছর হাওড়া ছিল সিপিএমের দখলে
২০০৯ থেকে হাওড়া রয়েছে তৃণমূলের দখলে
২০২৪ লোকসভার লড়াইয়ে হাওড়ার শিল্প নিয়ে তরজা তুঙ্গে। রাজনৈতিক তুতু-ম্যায় ম্যায় নিয়ে নাজেহাল হাওড়াবাসী। সাধারণ মানুষের দাবি বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানাগুলোকে চালু হলে এলাকার অর্থনৈতিক বিকাশ হতে পারত। হাওড়ার বর্তমান পরিস্থিতির জন্য বাম সরকারের কাঁধেই দায় ঠেলেছেন হাওড়া বিদায়ী সাংসদ তথা তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ সিপিএম কারখানা বন্ধ করে বাংলাকে শেষ করে দিয়ে গেছে।
হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র তথা বিজেপি প্রার্থী রথীন চক্রবর্তী অবশ্য বঞ্চনার কথা স্বীকার করেছেন। হাওড়ার সিপিএম প্রার্থীর অভিযোগ হাওড়া শিল্পকে শেষ করেছে তৃণমূলের পরিকল্পনার অভাব।
১৯৫১ সাল থেকে প্রতিটি নির্বাচনেই রাজনৈতিক দলের প্রতিশ্রুতি ও তার বাস্তবায়নের তুল্যমূল্য বিচার করলে হাওড়া যে বরাবরই দুয়োরানীর স্থানেই রয়েছে সেই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।