নিউজ ডেস্ক, ১১ ডিসেম্বর : সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপে সায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। দেশের শীর্ষ আদালতের কথায়, ৩৭০ ধারা ছিল অস্থায়ী ব্যবস্থা। তা বিলোপ অসাংবিধানিক নয়। তবে জম্মু-কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ২৪ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিধানসভার ভোট করতে হবে জম্মু-কাশ্মীরে।
সংবিধানের ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদে জম্মু-কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। ২০১৯ সালে সেই ৩৭০ ধারা বিলোপ করে মোদী সরকার। সাবেক জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যকে ভাগ করে দেওয়া হয় দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে। জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ। কেন্দ্রের এই পদক্ষেপের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে বহু মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। সব মামলা একত্রে এনে শুনানি শুরু করে দেশের শীর্ষ আদালত।
সোমবারের রায়ে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, ৩৭০ নম্বর বিলোপের সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক নয়। রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত বৈধ। ৩৭০ ধারা ছিল এক অস্থায়ী ব্যবস্থা। এর রূপান্তর ঘটানো যায়। সেই অধিকার আছে রাষ্ট্রপতির। রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন চলাকালীন সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আছে সংসদের। প্রয়োজন নেই রাজ্যের সম্মতির। এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করা যায় না।
শীর্ষ আদালতের এই রায়ে উচ্ছ্বসিত গেরুয়া শিবির। এক্স হ্যান্ডেলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, “৩৭০ ধারা বিলোপ সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়। ৫ আগস্ট ২০১৯-এর রায় সাংবিধানিক। এটা জম্মু কাশ্মীর ও লাদাখের ভাইবোনদের আশা, প্রগতি ও ঐক্যের রায়। মূল সুর হল ভারতীয় হিসেবে আমরা ঐক্যবদ্ধ। আমি জম্মু কাশ্মীর ও লাদাখের জনগণকে নিশ্চিত করতে চাই যে আপনাদের স্বপ্ন পূরণে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আজকের রায় শুধু একটি আইনি রায় নয়, এটা আশা, উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ও আরও শক্তিশালী, আরও ঐক্যবদ্ধ ভারত গড়ে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার রায়।”
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক্স হ্যান্ডেলে বলেছেন, ৩৭০ ধারা বিলোপের সিদ্ধান্ত সম্পর্কিত সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানাই। ৫ অগাস্ট ২০১৯-এ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৩৭০ ধারা বিলোপের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তারপর জম্মু কাশ্মীরে স্বাভাবিকতা ফিরেছে। বিকাশ ও উন্নয়নের নতুন অর্থ খুঁজে পেয়েছে সেখানকার মানুষ। পর্যটন ও কৃষি ক্ষেত্র আয় বাড়িয়েছে জম্মু, কাশ্মীর লাদাখের জনগণের। সুপ্রিম কোর্টের আজকের রায় প্রমাণ করল ৩৭০ ধারা বিলোপের সিদ্ধান্ত সাংবিধানিক ছিল।
সোমবার একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ দিয়েছে, অবিলম্বে জম্মু-কাশ্মীরকে ফিরিয়ে দিতে হবে রাজ্যের মর্যাদা। তবে লাদাখ থাকবে কেন্দ্র-শাসিত অঞ্চলই। ২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন করার নির্দেশও দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।